* আওয়ামীলীগ আমলে বাতিল হওয়া সুযোগ-সুবিধা ফিরে পেতে ধর্মঘটে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা
মুহ: ইউসুফ আল আজিজ : আওয়ামীলীগ আমলে বাতিল হওয়া সুযোগ সুবিধা ফিরে পেতে সারাদেশে আকস্মিক রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়েতে কর্মরত ১৭ শর বেশি রানিং স্টাফ। সোমবার মধ্যরাত থেকে সারাদেশে কর্মবিরতিতে রয়েছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। বেশিরভাগ মানুষ জানেনই না কি কারণে ট্রেন চলছে না।
ট্রেন না ছাড়ায় র্দীর্ঘ স্টেশনে বসে ছিলেন অনেকে। ট্রেনযাত্রার এ অনিশ্চয়তার কারণে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। অনেক স্থানে ঘটেছে ভাংচুরের ঘটনা। ভোগান্তি লাগবে কয়েকস্থনে বিকল্প যাতায়াত হিসেবে বিআরটিসি বাস চালু রেখেছে রেল কর্তৃপক্ষ। কাদের ইন্ধনে আকস্মিক ধর্মঘটে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সরকারের উপদেস্টারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর রেলওয়ের রানিং স্টাফদের বেতন, পেনশন ও আনুতোষিক কমিয়ে দেয়। রেলখাতে অর্থ অপচয় রোধে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করা হয়। সে সময় এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে তেমন তোড়জোড় করেনি রেলের রানিং স্টাফরা।
তবে সে সময় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ২০২২ সালে ১৩ এপ্রিল কর্মবিরতি পালন করলে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছিল। পরে রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। দীর্ঘ দিন পর হঠাৎ করে গত ২২ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলন করে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে দাবী আদায়ের আলটিমেটামদেয় রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। এবং সোমবার মধ্যরাত থেকে আকস্মিত রেল চলাচলবন্ধ করে দেয় ।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ভিআইপি রুমে আন্দোলনরত রানিং স্টাফদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেও কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ। রানিং স্টাফ নেতারা বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তারা আরো আলোচনা করবেন, তবে কর্মবিরতিও চলবে। মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিকের দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির এই কর্মবিরতি শুরু হয়।
এ সমস্যার সমাধানে আন্দোলনরত রানিং স্টাফদের নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বৈঠকে বসেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মো. ফাহিমুল ইসলাম। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পেরে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে বেরিয়ে আসেন রানিং স্টাফ প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি মো. সাইদুর রহমান বলেন, “আমরা দীর্ঘক্ষণ রেল সচিব ও মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তবে কোনো সিদ্ধান্তে আমরা পৌঁছাতে পারিনি বলে চলে এসেছি। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যারা আছেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। তবে আমরা আমাদের কর্মবিরতিতে অনড় আছি।”
পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রেলসচিব ফাহিমুল ইসলামকেও স্টেশন থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। যাওয়ার সময় তিনি বলেন, রেলভবনে আরেক দফা বৈঠক হবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে।
রেলকর্মীরা কর্মবিরতি শুরুর পর মঙ্গলবার সকালে কমলাপুর স্টেশনে যান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, “দাবি দাওয়া পূরণ রেল বিভাগের হাতে না, এটা অর্থ বিভাগের হাতে। আমরা অলরেডি অর্থ বিভাগের কাছে এটা তুলেছি। অর্থ বিভাগ এটা অনেকাংশে এটা পূরণ করে দিয়েছে। দরকার হলে আমরা বাকিটা নিয়েও তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।
উপদেষ্টা বলেন, ‘দাবি থাকতে পারে। কিন্তু ট্রেন বন্ধ রেখে যাত্রীদের জিম্মি করে আন্দোলন দুঃখজনক। এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের হাতে কিছু নেই, যা করার অর্থ মন্ত্রণালয়কে করতে হবে। আলোচনা চলছে, সমাধান হবে।’
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রেল কর্মীদের ওভারটাইম সংক্রান্ত যে যৌক্তিক দাবি ছিল সেটা অর্থ মন্ত্রণালয় মেনে নিয়েছে। বেশ কয়েকদিন আগেই তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মানা হয়েছে, আমরা দিয়েছি। তারপরও তারা কেন আন্দোলন করছে সেটা তাদের ব্যাপার। প্রত্যেকেরই একাধিক দাবি থাকবে। তারা বলেছে এটা দিতে হবে, ওভারটাইম এলাউন্স দিতে হবে। আমরা যতটুকু পেরেছি আমাদের সম্পদের হিসাব অনুযায়ী আমরা দিয়েছি।”
রানিং স্টাফ কারা ? কী তাদের দাবি?
গার্ড, লোকামাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার, সাব লোকো মাস্টার এবং টিটিইরা রেলের রানিং স্টাফ। সারাদেশে রেলওয়েতে ১৭ শর বেশি রানিং স্টাফ কাজ করেন। দৈনিক কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা হলেও রানিং স্টাফদের গড়ে ১৫–১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। সেজন্য তাদের আগে দেওয়া হত বিশেষ আর্থিক সুবিধা, যাকে রেলওয়ের ভাষায় বলা হয় মাইলেজ। মাইলেজ রানিং স্টাফদের বেতনেরই অংশ।
প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের এক দিনের বেসিকের সমপরিমাণ টাকা অতিরিক্ত পেতেন। ৮ ঘণ্টায় এক দিনের কর্মদিবস ধরলে রানিং স্টাফদের প্রতি মাসে কাজ দাঁড়ায় আড়াই বা তিন মাসের সমপরিমাণ। তাদের বেতনও সেভাবেই দেওয়া হত।
এ ছাড়া মূল বেতনের হিসাবে অবসরকালীন ভাতা যা হয়, তার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৭৫ শতাংশ টাকা বেশি দিয়ে তাদের পেনশন দেওয়া হত। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা ১৬০ বছর ধরে অবসরের পর মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পেয়ে আসছেন। রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিকÍ যে কোনো দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ট্রেন সচল রাখেন তারা।
তিনি বলেন, তাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসের বন্ধ নেই। কিন্তু গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিজেদের দুর্নীতি ও অর্থ অপচয় ঢাকতে অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর রেলওয়ের রানিং স্টাফদের বেতন, পেনশন ও আনুতোষিক কমিয়ে দেওয়া হয়। রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের এসব দাবির পক্ষে থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয় এ জটিলতা সৃষ্টি করেছে বলে দাবি করেন । নতুন নিয়োগ পাওয়া ট্রেনচালক, সহকারী ট্রেনচালকসহ রানিং স্টাফদের পুরোনোদের মত সুযোগ–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না ।
মজিবুর রহমান বলেন, ২০২২ সালের পর নিয়োগপত্রে দুটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা পাবেন না এবং মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না। এছাড়া অবসরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পাবেন, যা রেলওয়ের কোনো আইন বা বিধি বিধানে বলা নেই।
সীমাহীন ভোগান্তি :
সারা দেশে রেল যোগাযোগের ফলে কমলাপুর রেল স্টেশনে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে ট্রেন চলাচল বন্ধ হলেও কর্তৃপক্ষ বিআরটিসি বাসের মাধ্যমে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে যাত্রীরা বলছেন, ট্রেন চলাচল বন্ধের ব্যাপারে মেসেজের মাধ্যমে অবগত করা হলে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।
কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, যারা আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছেন এবং কর্মবিরতি সম্পর্কে জানতেন না, তারা সকাল থেকে স্টেশনে এসে ভিড় করছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে কেউ বাসে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন আবার কেউ ফিরে যাচ্ছেন।
বয়স্ক বাবা ও সন্তানকে নিয়ে জামালপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন খুরশিদ আক্তার নামের একজন নারী। আগেই টিকিট কেটে রেখেছিলেন তিনি। ভোরে শনির আখড়ার বাসা থেকে কমলাপুর রেল স্টেশনে আসেন। এসে জানতে পারেন ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে তিনি ফিরে যান।
যাত্রী মো. ইব্রাহিম রংপুর যাওয়ার উদ্দেশে কমলাপুর স্টেশনে এসেছেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জরুরি কাজে বোন ও ভাবিকে নিয়ে রংপুর যাচ্ছিলাম। স্টেশনে এসে জানতে পারলাম ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমনকি কখন ছাড়বে সে বিষয়েও কেউ কিছু বলতে পারছে না। ২ ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করেছি। আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করব। ট্রেন যদি না চলে টিকিট ফেরত দিয়ে বাস্টেশনে থাকা যাত্রী সুমাইয়া বলেন, সকাল থেকে স্টেশনে আছি। এসে দেখি ট্রেন ছাড়ছে না। কখন ট্রেন ছাড়বে সেটাও জানি না। জরুরি কাজে বাড়িতে যাওয়া দরকার ছিল। এখন কি করব বুঝতেছি না। আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখি কি হয়।
আরেক যাত্রী শ্রাবন বলেন, টিকিট আগেই কেটেছি। এখন স্টেশনে এসে দেখি ট্রেন ছাড়ছে না। শুনলাম কর্মচারীদের নাকি কর্মবিরতি চলছে। ভোগান্তিতে পড়ে গেলাম। কখন ট্রেন ছাড়বে সে সম্পর্কেও কেউ নির্দিষ্ট করে কিছু বলছে না।
ট্রেন না পেয়ে বিআরটিসি বাসে করে যশোরে যাচ্ছেন শান্তা নামের এক যাত্রী। তিনি ভোগান্তির কথা জানিয়ে বলেন, এখন একটু ভালো লাগছে। খুবই টেনশনে ছিলাম। দূরের রাস্তা, কীভাবে যাব। যশোরে যাব আমরা। আমাদেরকে যদি আগে একটু মেসেজ করাও হতো, যেহেতু আমরা ডিজিটালাইজেশনের মধ্যে চলে আসছি।
ট্রেনের বিকল্প হিসেবে বিআরটিসির বাসে করে যাচ্ছেন আরেক ট্রেনে যাত্রী রবিউল হোসেন। তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁয়ের টিকিট কেটেছিলাম। এখন কর্তৃপক্ষ একটা কোনোরকম ব্যবস্থা করেছে। এটা একেবারে খারাপ হয়নি। এ ব্যবস্থা না করলে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যেত।
আরেক যাত্রী বলেন, দাবি আদায় করার জন্য আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। এটা তাদের ভেতরের জিনিস, তারা তাদের মতো করে ঠিকঠাক করে নেবে। তার জন্য আমরা যদি ভোগান্তির শিকার হই, এটা খুবই কষ্টকর। আমি তিন দিন আগে টিকিট কেটেছি ট্রেন চলবে না। আমাদের তো মেসেজ আগে দিতে হবে। এত জিনিসপত্র নিয়ে এসেছি, এখন ট্রেন চলবে না, আমাদের কি কষ্ট হচ্ছে না?
বিকল্প পরিবহন বিআরটিসি :
মঙ্গলবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে রেল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলের বিকল্প হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটগুলোতে যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
আরও জানানো হয়, ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্রগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীগণ তাদের ক্রয়কৃত রেল টিকিটের মাধ্যমে এই ভ্রমণ করতে পারবেন। একইভাবে এ সকল স্থান থেকে ঢাকায় এই সার্ভিসের মাধ্যমে আসতেও পারবেন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বাস সার্ভিস চালু থাকবে।
রানিং স্টাফদের বিষয়ে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে রেল সচিব ফাহিমুল ইসলাম বলেন, শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিষয়ে আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। আমরা বলেছি আলোচনার দ্বার খুলে রেখেছি। সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী করবে সেটা বলতে পারি না। তারা যদি না আসে তাহলে তো আমাদের হাতে নাই ব্যাপারটা। সবসময় সব ব্যাপার কিন্তু রেল মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকে না।
রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, স্টাফদের যে দাবি মাইলেজ অ্যালাউন্সের দাবি, তা দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তাদের এই দাবির অনেক অংশ আমরা ইতোমধ্যে পূরণ করেছি। বাকি দাবিগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি। রেলতো কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না, এখানে আলোচনার সুযোগ আছে। রেল বন্ধের ফলে কিন্তু সরকারের অসুবিধা হচ্ছে না, অসুবিধা সাধারণ যাত্রীদের হচ্ছে। আমরা চাই এর সমাধান দ্রুত হোক। কারণ সামনে ইজতেমা আছে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন ছাড়ছে না। যদি তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে তবেই হয়তো ট্রেন ছাড়বে। এখনই নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ট্রেন না ছাড়লে যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। এজন্য যেকোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে কমলাপুর স্টেশনে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে জানা গেছে, প্রতিদিন কমলাপুর থেকে ৪০ জোড়া আন্তঃনগর এবং ২৪ জোড়া মেইল ট্রেন ছেড়ে যায়।