মিরর বাংলাদেশ : জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নারায়নগঞ্জ-৩ সোনারগাঁও এলাকার সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কঠিন এই সময়ে দিন নাই, রাত নাই ছুটছেন দূয়ারে দূয়ারে। কখনও খাবার প্যাকেট হাতে প্রতিবন্ধীর ঘরে, কখনও চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কাছে, কখনও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে দোকান-পাট হাটবাজারে। এভাবে রাতদিন অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। ঠিকমত খাওয়া নেই, বিশ্রাম নেই। পরিবারের সদস্যদের একটু সময় দেওয়ার ফুরসত নেই এখন তার হাতে। নির্বাচনী এলাকার লোকজনই এখন তার সব। এলাকার করোনামুক্ত থাকলে, দুমুঠো খেয়ে মানুষ ঘরেবাড়িতে অবস্থান করলেই তার মনে যত প্রশান্তি।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই নির্বাচনী এলাকায় পড়ে আছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি।
জানা গেছে, সোনারগাঁও এলাকায় এ পর্যন্ত ২৮ হাজার বিভিন্ন পেশার মানুষকে এলাকার সংসদ সদস্য খোকার পক্ষ থেকে নগদ টাকা, খাদ্যসামগ্রী, ত্রান ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে খাদ্য সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। কখনও এমপি নিজেই রাতের অন্ধকারে দিয়ে আসছেন। ব্যক্তিগত ছাড়াও সরকারি বরাদ্দের ত্রান সামগ্রী ও প্রধানমন্ত্রীর
এক সপ্তাহে এমপি খোকার নিজস্ব তহবিলে থেকে সোনারগাঁও পৌরসভায় ১৫শ প্যাকেট, নোয়াগাঁও ইউনিয়নে ২ হাজার প্যাকেট, পিরোজপুর ইউনিয়নে ১৪শ প্যাকেট, মোগড়া পাড়া ইউনিয়নে ১হাজার প্যাকেট, শম্ভুপুরা ইউনিয়নে ১ হাজার প্যাকেট, বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নে ১২শ প্যাকেট, প্রতিবন্ধীদের জন্য ১৮৯ প্যাকেট, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৬০ প্যাকেট, রিক্সা চালকদের জন্য ১ হাজার প্যাকেট, অসহায় নারী ও শিশুদের জন্য ১ হাজার প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ৩ হাজার সিএনজি চালকের জন্য ৩ হাজার প্যাকেট। বাদ যায়নি ট্রাক চালক, বাস চালক, মটর চালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, মুচি, জেলেসহ নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশার মানুষও। প্রতি প্যাকেটে চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, লবণ, আলু, পিয়াজ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে বিপুল পরিমাণ দেড় লাখ মাস্ক, ৩০ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৫ টন ব্লিচিং পাউডার ও স্প্রে মেশিন বিতরণ করা হয়েছে।
কেমন আছেন, এলাকার অবস্থা কী জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে তিনি বলেন, আলহামদুল্লিাহ, জানেন তো নারায়নগঞ্জ করোনায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমরাও শঙ্কিত। নির্বাচনী এলাকা নিয়েই আছি। তারাই এখন আমার আপনজন।
তিনি বলেন, বেশি করে করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আশা করছি এখন থেকে আমার এলাকায়ও বেশি করে করোনা পরীক্ষা হবে। তিনি লকডাউন আরো কড়াকড়ি করার জোর দেন, যাতে কোনভাবেই মানুষ ঘরবাড়ি থেকে বের না হন।
খোকা বলেন, করোনার শুরুতে স্থানীয় প্রশাসন, চেয়ারম্যান মেম্বারদের সঙ্গে আলোচনা করে দরিদ্র, শ্রমিকসহ পেশাজীবী ধরে ওয়ার্ড ভিত্তিক আমি আলাদা তালিকা করেছি। ২৮ হাজার মানুষের তালিকা হয়েছে। এটি ৪০ হাজার পর্যন্তে হবে। এসব মানুষের দেখাশুনার জন্য আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ সবাইকে নিয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক টিম করেছি। এরমধ্যে আমি নিজেই খাদ্য, ত্রান ও প্রধানমন্ত্রীর উপহার পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক টিম যে যেভাবে পারছেন সবকিছুই পৌছে দিচ্ছেন। আমরা হটলাইন চালু করেছি। সেখান থেকে মধ্যবিত্তদের নাম ঠিকানা গোপন রেখে খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাতদিন ঘুম নেই কারো। আমি নিজেই দূয়ারে দূয়ারে যাচ্ছি। এলাকাবাসীকে করোনামুক্ত রাখতে পারলেই শ্রমের সার্থকতা মনে করেন এমপি খোকা। তিনি চিকিৎসক, স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।