মিরর প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ :
নারায়ণগঞ্জে করোনায় থেকে সুস্থ হয়ে র্যাব-১১ এর ১০৮ জন সদস্য কাজে যোগদান করেছেন।
সিদ্ধিগঞ্জের আদমজী র্যাব-১১ এর প্রধান কার্যালয়ের চারতলায় ও শহরের পুরোনো কোর্ট ভবনস্থ ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশাল কোম্পানিতে কারোনায় আক্রান্ত ওই র্যাব সদস্যরা আইসোলেশনে ছিলেন।
র্যাব ১১ এর ১১৭ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এর মধ্যে ১০৮জন সুস্থ হন।
জানা গেছে , করোনার শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জে লকডাউন নিশ্চিত করা, কর্মহীন মানুষকে খাদ্য বিতরণ, নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মানুষের সংস্পর্শে এসে র্যাব-১১ এর ১১৭ জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে গত সোমবার পর্যন্ত ১০৮ জন সদস্য সুস্থ হয়ে কাজে ফিরেছেন। বাকি ৯ জন সদস্য আদমজীনগরে র্যাব-১১ এর সদর দফতরে আইসোলেশনে রয়েছেন।
তাদের কোন উপাসর্গ নেই। চলতি সপ্তাহেই তাদের টেস্ট হবে এবং পরপর তিনবার টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেই তারা সুস্থ বলে ধরা হবে। এরপর তারা কাজে যোগদান করবেন।
র্যাবের পক্ষে থেকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান,১০৮ জন করোনা জয়ী র্যাব সদস্যকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীস্থ র্যাব-১১ এর সদর দফতরে অনুষ্ঠান করে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন তারা।
র্যাব সদস্যরা শুরু থেকেই মানসিকভাবে দৃঢ় ছিলেন এবং তাদের মনোবল অটুট ছিল। তারা সুস্থ হয়ে আগের চেয়ে আরও দ্বিগুণ গতিতে কাজ করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন র্যার -১১ এর অধিনায়ক।
র্যাব-১১ থেকে জানা যায়, আক্রান্ত সদস্যরা নিজস্ব আইসোলেশন ব্যবস্থায় থেকেই সুস্থ হয়েছেন। শুধু বয়স্ক ও অধিক উপসর্গ থাকায় ৯ জনকে ঢাকায় সিএমএইচে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। তারা সুস্থ হয়ে ফিরেছেন।
বাকিদের ব্যাটালিয়ন সদর দফতরেই আইসোলেশনে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। র্যাবের নিজস্ব আইসোলেশন ব্যবস্থাপনার বিস্তারিত তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, অন্য বাহিনী ও বিভিন্ন দফতরে নিজস্ব ব্যবস্থায় কর্মীদের সেবা দিয়ে সুস্থ করতে পারার বার্তা দিতেই আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আমাদের সদস্যদের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, শুরু থেকেই কাজ করতে থাকা করোনা সংক্রামণ রুখতে র্যাবের ১১৭ সদস্যের কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।
কিন্তু আমাদের সদস্যদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে ভিড় থাকায় গত ৩০ এপ্রিল র্যাব-১১ এর ব্যারাকে চতুর্থ তলায়র নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ১৪০ শয্যা ও ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশাল কোম্পানিতে ২০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট স্থাপন করা হয়।
আক্রান্তরা সেখানেই চিকিৎসা নিয়েছেন এবং এখনও ৯ জন আইসোলেশনে রয়েছেন। তবে তারা সবাই সুস্থ আছেন।
তিনি বলেন, তাদের রুম জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করা হয়েছিলো। এছাড়া যারা সেখানে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ ও খাবার বিতরণ করছেন তাদের জন্য পিপিই দেয়া হয়েছে।
চিকিৎসাধীন র্যাবের সদস্যদের সদর দফতরের মেডিকেল অফিসার, সিএমএইচ, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল ও জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন চিকিৎসা বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন।
এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরের জারি করা করোনা ট্রেটমেন্ট প্রোটোকল অনুসারে অক্সিজেন সিলিন্ডার, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, পোর্টেবল ইসিজি মেশিন, ২৪ ঘণ্টা জরুরি রোগী বহনের জন্য অক্সিজেন সুবিধার অ্যাম্বুলেন্সসহ যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আইসোলেশনে যারা আছেন, তাদের ডিসপোজেবল প্লাস্টিকের পাত্রে তিন বেলা খাবার দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন ফল, লেবু, আদা, লবঙ্গ, কালোজিরা খেতে দেয়া হয়েছে।
একইভাবে তাদের সুরক্ষায় দৈনিক ব্যবহারের জন্য ফেস মাস্ক, পিভিসি হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ন্যাপকিন দেয়া হয়।
তাদের জন্য আলাদা প্রার্থনা কর্নার, গরম পানির বাথরুম, বৈদ্যুতিক কেতলি, টিভি ও সংবাদপত্র দেয়া হতো। এখনও আইসোলেশনে থাকা ৯ জনকে এসব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।