রাশেদুল হক শেরপুর :
মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে সারা বিশ্বে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও নানা ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সন্দেহভাজন ব্যাক্তিদের নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা করে ফলাফল প্রদান করা। বগুড়ার শেরপুরের ৪ কৃতি সন্তান করোনা যুদ্ধের সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত আরটি পিসিআর ল্যাবে ও মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে আইসোলেশন সেন্টারে কাজ করছেন। এরা হচ্ছেন ডাঃ আমিরুল ইসলাম, ডাঃ ইকবাল হোসেন সনি, ডাঃ সামিউল হক এবং ডাঃ অমিত কুমার লাহা।
ডাঃ আমিরুল ইসলাম ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ, ডাঃ ইকবাল হোসেন সনি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, ডাঃ সামিউল হক রংপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লেকচারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু করোনা ভাইারাসের বিস্তারের কারণে তাদেরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে শজিমেকের আরটি পিসিআর ল্যাবে পদায়ন করেছেন কর্তৃপক্ষ। তারা সবাই বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আসা করোনা ভাইরাস সন্দেহ ব্যাক্তিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা করছেন। জীবনের ঝুকি নিয়ে তারা সকলের নমুনা পরীক্ষা করছেন। এদের কিন্তু জানা নেই যে কোনটি নেগেটিভ কোনটা পজিটিভ।
এ ব্যাপারে ডাঃ ইকবাল হোসেন সনি বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে নিজের জীবনের পরোয়া না করে বিভিন্ন এলাকা থেকে নিয়ে আসা করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করে যাচ্ছি। আমরা কয়েকজন নিজের দেহে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করেছে কিনা সেজন্য ৭ দিন পর পর ল্যাবে গিয়ে পর্যায়ক্রমে নমুনাগুলো পরীক্ষা করছি। জানিনা এ অবস্থা কতদিন থাকবে।
এদিকে আরেকজন করোনা যোদ্ধা ডাঃ অমিত কুমার লাহা সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম বি বি এস পাশ করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে নিযুক্ত আছেন। তাকেও করোনা ভাইরাসের কারণে বগুড়া আইসোলেশন হাসপাতালে (মোহাম্মাদ আলী হাসপাতাল) অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি আইসোলেশনে থাকা করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যাক্তিদের সরাসরি দেখাশোনা করছেন। তিনি প্রথম যেদিন দায়িত্ব পালন করেছেন সেদিন আক্রান্ত ব্যাক্তি ছিল ১০ জন। যা বেড়ে এখন দাড়িয়েছে প্রায় ৩৭ জনে। জীবনের ঝুকি নিয়ে তিনি করোনা আক্রান্ত রোগীদের সরাসরি দেখাশোনা করছেন।
এ ব্যাপারে ডাঃ অমিত কুসমার লাহা বলেন, ডাক্তারী পেশা একটি মহনে পেশা। অসুস্থ ব্যাক্তিদের চিকিৎসা দিয়ে ভাল করে তোলাই আমাদের কাজ। তাছাড়া দেশের এমন পরিস্থিতিতে সরকার আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালন করার চেষ্টা করছি। তিনি আরো বলেন, আমরা কয়েকজন রোস্টার অনুযায়ী ১৪ দিন করে হোম কোয়ারেন্টাইন পালন করে আইসোলেশনে করোনা রোগী দেখছি।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ লিয়াকত আলী সেখ, সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জামশেদ আলাম রানা, উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোঃ রায়হান পিএএ বলেন,
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার প্রচার-বিমুখ এই ৪ কৃতি সন্তান করোনা ইস্যুতে নীরবে মানব সেবা করে চলেছেন। এরা শেরপুরবাসীর গর্ব। আমরা এই চার কৃতি চিকিৎসককে তাদের মহৎ কাজের জন্য অভিবাদন জানাচ্ছি।