কস্টের শেষ নেই রামপালের মানুষের

736

মিরর প্রতিনিধি রামপাল :

আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনা রামপালের মানুষের কস্টের     শেষ নেই। অনেক পরিবার এখনো পানি বন্দি।নেই পর্যাপ্ত খাবার।

জানা গেছে,  আম্পানের আঘাতে এ উপজেলার শত শত চিংড়ি ঘের ভেসে গিয়ে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের রোমজাইপুর গ্রামের পূর্বপাশ দিয়ে গ্রাম রক্ষা বাঁধ ও সরকারি রাস্তা ভেঙে অর্ধশত চিংড়ি ঘের ভেসে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া দুই শতাধিক বাড়ি জোয়ার আসলে তলিয়ে যাচ্ছে এবং ভাটা আসলে জেগে উঠছে। জলোচ্ছাসের তাণ্ডবে গবাদি পশু হাঁস, মুরগী মারা গেছে ও ভেসে গেছে। কয়েকটি মুরগির খামার ভেসে গেছে। শাকসবজির ক্ষেত তীব্র লবণাক্ত পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।

ইতিমধ্যে ওই এলাকার শিশুদের সর্দি কাশি ও পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। দেখা দিয়েছে তীব্র সুপেয় পানির সংকট। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে পরিবারের সদস্যরা নির্ঘুম রাত পার করছে। প্রতি পরিবারের পায়খানাগুলো ভেসে যাওয়ায় রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেখা দিয়েছে পশু খাদ্যের সংকট। ব্যাংক, এনজিও থেকে ঋণ করে মৎস্য চাষ করেছেন চাষীরা। চিংড়ি আহরণের ভরা মৌসুমে মাছ ভেসে যাওয়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষীরা।

গত এক সপ্তাহের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা গতানুগতিকভাবে পরিদর্শন করে আসলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়নি।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকাল জনপ্রতিনিধিদের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা দিতে বলা হলেও সেটিও এখনও পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের দফতরে পৌঁছেছে কিনা তাও জানা যায়নি।

মৎস্য চাষী ও ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ির মালিক তুহিন মোল্যা, ওহাব আলী শেখ, গৃহবধু খায়রুন নেছাসহ অনেকেই বলেন, এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা তো দূরের কথা কেউ খবরও নেয়নি, দেখতেও আসেনি। এভাবে প্রতিদিন পানি ওঠানামা করতে থাকলে দুই শতাধিক পরিবারকে এখান থেকে অন্যত্র চলে যেতে হবে। দুর্গতরা দ্রুত ত্রাণ সহায়তাসহ গ্রাম রক্ষা বাঁধ মেরামতের দাবি জানান।

এ ঘটনায় রামপাল উপজেলা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ সবুর রানা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে দুইশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। অর্ধশত মৎস্য খামার ভেসে গেছে কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি যা খুবই দুঃখজনক। তিনি দূর্গতদের খাদ্য সহায়তাসহ জরুরীভাবে গ্রাম রক্ষা বাঁধ মেরামতের দাবি জানান।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদুল্লাহ  বলেন, মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে দূর্গত এলাকায় পাঠানো হয়েছিল। তিনি নিরূপণ করে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করছেন। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা তিনি বলতে পারেননি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্ব স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্গতদের তথ্য চাওয়া হলেও কেন সেটি এখনও তারা দেয়নি সেটা খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি আরও বলেন,  সরেজমিনে গিয়ে দূর্গত এলাকা পরিদর্শন করে দুর্গতদের সহযোগিতাসহ গ্রামরক্ষা বাঁধ দ্রুত মেরামত করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবকিছু করা হবে।