কৃষকের আয়ে করারোপ একেবাইরেই অযৌক্তিক : বাংলাদেশ ন্যাপ

444

মিরর বাংলাদেশ :

করোনার এই সময়ে চরম ক্ষতির সম্মুখীন কৃষকের পাশে সরকার যখন বিভিন্ন প্রণোদনাসহ নানান সাহায্যে এগিয়ে এসেছে ঠিক সেই সময় রাজস্ব বাড়ানোর নামে এনবিআর কৃষকের আয়ের ওপর মোটা অঙ্কের কর আরোপ করাকে একেবারেই অযৌক্তিক হিসাবে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

সোমবার (১১ মে) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ সব কথা বলেন।

তারা বলেন, কৃষকের ক্রয়ের ওপর ২% কর কর্তন বাধ্যতামূলক, নাহলে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৩% উৎসে কর কাটার নীতি সম্পূর্ণ অবাস্তব ও অনৈতিক। এর সিদ্ধান্তের ফলে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান যারা কৃষকদের কাছ থেকে কাঁচামাল কেনে, তারা বিপাকে পড়েছে। সাধারণত এসব প্রতিষ্ঠানই কর কর্তন করে সরবরাহকারীদের মূল্য পরিশোধ করে থাকে। কিন্তু অধিকাংশ কৃষকের টিআইএন নম্বর না থাকার কারণে তারা তা করতে পারছেন না। যার কারণে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, কৃষকের ওপর এ ধরনের কর আরোপ করা একেবারেই অযৌক্তিকই। এনবিআর উৎসে করের ব্যবহার বেশি করে ফেলছে। আয়কর হওয়া উচিত মুনাফার ওপর। কিন্তু উৎসে কর আরোপ করায় অনেক ক্ষেত্রে তা পণ্যের মূল্যের মধ্যে ঢুকে পড়বে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ’ হবে ভোক্তারা। সরকারের উচিত হবে কৃষকের কল্যাণের স্বার্থে আগামী বাজেটে এ ধরনের কর আরোপ না করা।

তারা বলেন, বর্তমানে করোনার কারণে অর্থনৈতিক মন্দা, অন্যদিকে আড়তদারদের কারণে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। বিগত প্রায় দুই হতে চলা দেশব্যাপী চলতে থাকা সাধারণ ছুটির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা তাদের ফসল বিক্রি করতে পারছেন না। এর কারণে অনেক ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যা বিক্রি করতে পারছেন, তারও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন খাত ক্ষতি ও লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মতোই নাজুক অবস্থঅ চলছে কৃষি খাতেও। এই অবস্থা ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্যোগের আগাম বার্তা দিচ্ছে। আর ভবিষ্যৎ দুর্দশা ঠেকাতে যে কোন মূল্যে কৃষি উৎপাদন সচল রাখতে হবে। অর্থাৎ কৃষকরাই আগামী দিন দুর্যোগ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

নেতৃদ্বয় বলেন, সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিকাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন। কোনো আবাদি জমি যেন খালি না থাকে সেই নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার ঘোষণা দিয়েছে। অথচ এনবিআর কৃষকদের কাছ থেকে কর কর্তনের যে বিধান তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিপরিত নয় কি ? এই বিধান সম্পূর্ণ অবাস্তব এবং কৃষকের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা ছাড়া আর কিছুই না। কৃষকরা কাঁচামাল উৎপাদন এবং সরবরাহ করে নির্দিষ্ট পরিমাণ অঙ্কের টাকা আয় করে থাকেন। সেই কাঁচামাল মজুদের ওপর যদি অতিরিক্ত কর চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দার সময় কৃষকরা আরও নাজেহাল অবস্থায় পড়বে। এর ফলশ্রুতিতে করোনার এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে অর্থনীতি মহাদুর্যোগে পতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।