মিরর বাংলাদেশ: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সাথে বিজিবি’র সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে দাঁড়িয়েছে। এর মাঝে আছেন এক বিজিবি সদস্য ও একই পরিবারের চারজন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গাজিনগর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
বিজিবি জানায়, অবৈধভাবে গাছ কাটার সময় বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে স্থানীয়রা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিজিবি সদস্য শাওন ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরে আত্মরক্ষার্থে বিজিবি গুলি চালালে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তবে স্থানীয়রা ঘটনার জন্য বিজিবিকে দায়ী করে বলেন, সকালে গাছ কাটতে গেলে বিজিবি সদস্যদের বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গ্রামবাসীর উপর অতর্কিত গুলি চালায় বিজিবি সদস্যরা।
ঘটনাস্থলে নিহতরা হলেন ৪০ বিজিবি’র সিপাহী শাওন, স্থানীয় বাসিন্দা সাহাব মিয়া (মুছা) (৭০) ও তার দুই সন্তান আকবর আলী (৩০), আহমেদ আলী (২৪)।
স্বামী ও দুই সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে আলুটিলা বটতলীর নিজ বাড়িতে সাহাব মিয়ার স্ত্রী রঞ্জু বেগম (৬০) স্ট্রোক করে মারা যান।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরো দু’জন মাফিজ মিয়া ও হানিফ মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মফিজ মিয়া (৫০) মারা যান।
এদিকে, ঘটনার পর বিকেল ৩টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সেনাবাহিনীর গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহরিয়ার জামান, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মো: আব্দুল আজিজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহ উদ্দিন, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ। এসময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহরিয়ার জামান ঘটনার তদন্ত করে বিচারের আশ্বাস দিয়ে এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করেছে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। ওসি শামছুদ্দিন ভুঁইয়া জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলেও জানান তিনি।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মাটিরাঙা সার্কেল) খোরশেদ আলম বলেন, সংঘর্ষের কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।