খালেদা জিয়া মানুষ হত্যা করা সন্ত্রাসীদের বিচার না করার ইনডেমনিটি দিয়েছে –প্রধানমন্ত্রী

378

মিরর বাংলাদেশ : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর (শেখ মুজিবুর রহমান) হত্যাকারীদের বিচার না করার ইনডেমনিটি দিয়েছে। তার স্ত্রী খালেদা জিয়া মানুষ হত্যা করা সন্ত্রাসীদের বিচার না করার ইনডেমনিটি দিয়েছে।’
রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় (ভার্চুয়াল) গণভবন প্রান্ত থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেই আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটিকে ভিসা দেয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আইন করে বন্ধ রেখেছে এবং পাকিস্তানি মদদদাতা আলবদর, রাজাকার, আল-শামসদের মন্ত্রী-উপদেষ্টা করে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে।’
কর্নেল বেগ জিয়াউর রহমানকে চিঠিতে যে নতুন কাজ দেয়ার কথা বলেছিল, তা ১৫ আগস্টের এই হত্যাকাÐের অ্যাসাইনমেন্ট কি না- সে প্রশ্ন করেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এই আলোচনা সভায় যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘১৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চিরতরে নস্যাৎ করে দেয় খুনিরা।’
তিনি বলেন, ‘মীরজাফরের মতোই খুনি মোস্তাককে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে ক্ষমতা হাতে নিয়েছিল জিয়াউর রহমান। খুনিদের বিচার বন্ধ করা, তাদেরকে ব্যাংকক হয়ে লিবিয়া পাঠানোসহ সকল কর্মকাÐ প্রমাণ করে জিয়াউর রহমান এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনায় ছিল।’
স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির মেয়ে হয়েও তাদের নাম পরিচয় গোপন করে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়েছে। আর খুনিরা বিভিন্ন দূতাবাসে আরাম-আয়েশে জীবন কাটিয়েছে। খুনিদের বিচার না করার ইনডেমনিটি দিয়েছিল জিয়াউর রহমান আর সন্ত্রাসীদের ইনডেমনিটি দিয়েছিল তার স্ত্রী খালেদা জিয়া।’
‘উচ্চ আদালত সামরিক শাসনামলের অর্ডিন্যান্স বাতিল করে দেশকে অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা করেছে’ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের মধ্যে আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরে এসেছে।’
দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করা জাতির পিতার কাছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অঙ্গীকার বলেও এ সময় জানান শেখ হাসিনা।
২০০১ সালে সরকার গঠন করে অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে খালেদা জিয়া মানুষ হত্যা শুরু করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে বহু মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আবার সেসব হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধে ইনডেমনিটিও দিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি দিয়েছিলেন। ঠিক যেভাবে তার স্বামী জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি দিয়েছিলেন। জিয়ার ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ অনেকেই এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের কথা বলে। কিন্তু সবাই ভুলে গেছে খালেদা জিয়া ২০০১ সালে সরকারে এসে মানুষ হত্যা শুরু করে। আবার সেসব হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধে ইনডেমনিটিও দিয়েছিলেন। অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের যাকে যেখানে পেয়েছে নিয়ে হত্যা করেছে। আর সেই হত্যার বিচার হবে না বলেও ইনডেমনিটিও খালেদা জিয়া দিয়ে গেছেন। তার স্বামী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়েছিলেন আর তিনি এসে নির্বিচারে মানুষ হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে গেছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যুবলীগের মাসুমকে যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছিল, যার ফলে সে মৃত্যুবরণ করেছিল। এরকম শত শত লোককে হত্যা করে। আমাদের রিসার্চ সেন্টার দখল করে নেয়। ১৫টি কম্পিউটার, বই, ৩০০ ফাইল, নগদ টাকা সব কিছু লুট করে সিল করে দেয়। যেন আমরা সেখানে বসে কাজ করতে না পারি। একটা রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালানোর পথ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে।