ছবি : মালয়েশিয়ায় স্বামীর হাতে খুনের শিকার সাজেদা ই বুল বুল
ছবি : সাজেদা খুন হওয়ার পর যুগান্তরে প্রকাশিত ছবি সহ নিউজ।
মিরর বাংলাদেশ: মেয়েটি নৃশংস ভাবে খুন হয়েছে তার স্বামীর হাতে। ঘাতক স্বামী তাকে হত্যার পর লাশ বারো টুকরা করে । পরে ১২ টুকরা লাশ একাট লাগেজে ভর্তি করে ফেলে দেয়া হয় রাস্তার পাশ্বে ডোবাতে। । হ্যা, বরিশালের সেই মেয়েটির কথা বলছিলাম। নাম সাজেদা ই বুল-বুল।২০১৮ সালের ৫ জুলাই মালয়েশিয়ায় স্বামীর হাতে খুন হন এ তরুনী। ঘাতক স্বামী হত্যার ঘটনার পর২০১৮ সালের ৭ আগষ্ট গ্রেফতার হয়ে মালয়েশিয়ার জেলে দন্ড খাটছেন।আলোচিত এ হত্যার ঘটনা সে সময়ে দেশ বিদেশের মিডিয়ায় আলোড়ন তোলে।
ফেসবুকে এমন ছবি ও তথ্য প্রচার করে অপপ্রচারকারীরা ।
…..………..
.প্রশ্ন আসতে পারে হঠাৎ করে কেন মেয়েটিকে নিয়ে আবার আলোচনা। তার উত্তর খুজতে গিয়ে জানা গেছে সম্প্রতি কিছু বাক্তি খুন হওয়া সাজেদার ছবি এবং ঘাতক স্বামীর ছবি ফেসবুকে দিয়ে নানা রকম মন্তব্য করছেন। তাদের অনেকে জানেই না এই মেয়েটি খুন হয়েছে। তবে দুই একজন জানার পর ফেসবুকে দু:খ প্রকাশ করছেন।
ফেসবুকে অপতৎপরতার আরেকটি চিত্র।
……….…………….
নিহত সাজেদাই বুল-বুলের পরিবার আক্ষেপ করে জানান. একটা খুন হওয়া মানুষের সাথে এ কেমন তামাশা। এসব ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করা চিন্তাভাবনা করছেন তারা।
সাজেদা ই বুলবুলের বোন খাদিজা পারভীন উপমা জানান, আমার মনে করি একটা মৃত ব্যাক্তির সাথে এটা উপহাস। যেটা আমরা মেনে নিতে পারিনা। আমার বোন খুন হয়েছে। ঘাতক জেলখাটছে। হঠাৎকরে এমন অপতৎপরাতা ঘাতককে বাচানোর কৌশল মাত্র।ফেসবুকে এন অপপ্রারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা প্রস্ততি নিচ্ছি।
ফেসবুকে মৃৃত সাজেদাকে নিয়ে অপপ্রচার।
…………
পেছনের আরো খবর হলো, ২০১৮ জুলাই মাসের পাঁচ তারিখে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের সুঙাই গম্বাকের জালান ইপো ব্রিজের নিচ থেকে লাগেজে ভরা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশের নারী আইনজীবী সাজেদাই বুল-বুলের বারো টুকরো লাশ।
পরিবার ও পুলিশের দাবী স্বামীর হাতে নির্মম ভাবে খুন হয় সাজেদা।
সাজেদাই বুল-বুলের খুনের ঘটনা ওই সময়ের আন্তর্জাতিক এবং দেশের জতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোর প্রথম পৃষ্ঠায় স্থান পায়, এবং দেশি-বিদেশি প্রায় সকল টেলিভিশন চ্যানেলে প্রধান খবরে সম্প্রচার হয়।
ছবি :মালয়েশিয়ায় জেলে সাজা খাটছেন সাজেদার ঘাতক স্বামী। .
…………..
প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম পাশ করা মেধাবী ছাত্রী সাজেদার মরদেহ, সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপে ঘটনার ৪৩ দিন পরে পরিবার দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। ইতিমধ্যে লাশ উদ্ধারে ৩২ দিন পরে,২০১৮ এর ৭ আগস্ট মঙ্গলবার ঘাতক স্বামী মোঃশাহজাদা সাজুর বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় দেশটির ম্যাজিস্ট্রিক কোর্ট ৷ মামলাটি বর্তমানে দেশটির উচ্চ আদালতের বিচারাধীন অবস্থায় আছে।
এদিকে ঘাতকের পরিবার ও সহযোগীরা গত প্রায় দুই বছর ধরে ভিক্টিমের পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে, ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে এবং ঘাতকের যাতে শাস্তি না হয় সে জন্য মালয়েশিয়ার প্রশাসনের সাথে বহুবিধ দেন দরবারও করেছে বলে জানা যায়।
বর্তমান করোনার মহামারীর ভয়ে প্রায় সবাই যখন অস্থির তখন একদল মানুষ রুপি হায়না ফেইসবুকে আতংক ছড়াতে ব্যাস্ত।
আর ঠিক এই সুযোগটা লুফে নিয়েছে ঘাতক শাহাজাদার পরিবার, মৃত্য সাজেদার ছবি ব্যবহার করে ফেইসবুকে করোনার আতংক ছড়িয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি তারা বানিয়েছে করোনা সংক্রান্ত হাস্যকর খবরও।
ফেইসবুক ঘুরে দেখা গেছে SIMANTABANI.COMনামে একটি অনলাইন ভুঁইফোঁড় পত্রিকার নামে তারা এসব খবর ছড়াচ্ছে।
ছবি : সাজেদার লাশের কফিনের সামনে বোন উপমা
………………..
গুজব ছড়িয়েছে এমন কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করে কোন উত্তর পাওয়া যায় নি।
সাজেদার বাবা মোহাম্মদ আনিছ ফিটারের কাছে মুঠোফোনে এই ব্যপারে জানতে চাইলে, তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন ” আমার মেয়ে হারিয়েছি, মেয়ের রেখে যাওয়া একমাত্র নাতনীর জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছিনা, আজ দুই বছরেও মেয়ে হত্যার বিচার পাইনি, এখন আবার আমার মৃত্য মেয়ের ছবি দিয়ে কি সব খবর বের করছে, আমার মেয়েটারে এভাবে মারলো, মরে গিয়েও শান্তি পাচ্ছে না আমার মেয়েটা, কেউ কি নাই এসব দেখার! এদের কি বিচার হবেনা? ” বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সাজেদাই বুল-বুলের বাবা।