চ্যালেঞ্জের মুখেই নবীনগরে সফল সমাবেশ করলেন বিদিশা-মামুন

299
মিরর বাংলাদেশ : রাজনীতিতে বিদিশার আগমণ বরাবরই উত্তেজনা সৃষ্টি করে জাতীয় পার্টিতে। এবারও তেমনটাই হয়েছে। বিদিশার পদযাত্রায় অনেকের ভয় ভর করেছে অস্থিত্ব রক্ষার আতঙ্কে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বিদিশা এরশাদ ও পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদের সফরকে কেন্দ্র করে নরেচড়ে বসে দলের বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের অনুসারিরা।
বিদিশার সফর প্রতিরোধে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়া তারা। নবীনগরে বিদিশা-মামুনের আগমণ রুখতে দেয় নানা রকম হুমকি-ধামকি। স্যোশাল মিডিয়া ফেসবুকে এনিয়ে ওঠে তুমুল ঝড়। একে অপরকে করে গায়েল। নিজেরাই নিজেদের দায়িত্বশীল নেতাদের ঘাঁড়ে ব্যর্থতার দোষ চাপেন। প্রতিরোধে দেয়া হয় মানববন্ধন, যা ছিলো হাতে গুনা মাত্র কয়েকজনের উপস্থিতি প্রদর্শন।
এতসব হুমকি-ধামকির মুখেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে সফল অনুষ্ঠান করলেন বিদিশা এরশাদ। আর নিজ এলাকা বলে নবীনগর সফরকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন বিদিশার নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির ওই অংশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ। তা সফলও করেছেন তিনি। হাজারো মানুষের ঢল নামে নবীনগরে কাজী মামুনের ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে। দুপুরে সড়কপথে নরসিংদী হয়ে স্পীডবোডে করে নবীনগর আসেন বিদিশা।
উপজেলার বরিকান্দি ইউনিয়নে হযরত শাহ সুফি গনিশাহ (র.) মাজার জিয়ারত করেন বিদিশা-মামুনের প্রতিনিধি দল। এরপর সেখানে অসহায় দূস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন তারা। নবীনগর উপজেলা জাতীয় যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আল আমিনের সঞ্চালনায় ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. রজব আলী মোল্লা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পল্লীবন্ধুপুত্র ঘোষিত পূর্ণগঠনে জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান বিদিশা এরশাদ বলেন, জিএম কাদেরের বন্ধিদশা থেকে এরিককে মুক্ত করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন আপনাদের ছেলে, নবীনগরের কৃতিসন্তান কাজী মামুন। তিনি শুধু আপনাদের সন্তান নয়, মামুন এখন সারা বাংলাদেশের সন্তান। তিনি দেশজুড়ে জাতীয় পার্টি পূর্ণগঠনের দায়িত্ব নিয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে কাজ করছেন। বিদিশা বলেন, তিন মাস এরিকের চাচা তাকে ঘরে আটকে রেখেছিলো। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয় পিতাহারা শিশুর উপর। এরশাদের মৃত্যুর পর এরিকের চাচা জিএম কাদের ও তার অনুসারিরা সম্পদ আত্মসাতের জন্যই নানা অপকৌশল চালায়। সেখান থেকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাষ্ট ও এরিককে উদ্ধার করেন আপনাদের সন্তান কাজী মামুন।
মাজার জিয়ারত আর দুস্থদের ত্রাণ বিতরণ নির্বাচনী তৎপরতা নয় উল্লেখ করে পূর্ণ গঠনে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ বলেছেন, কারো চ্যালেঞ্জে বিদিশা-মামুন ভয় পায় না। নবীনগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা কারো হুমকি-ধামকিতে বিচলিত নন।
তিনি বলেন, সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই ত্রাণ বিতরণে এলাম। কই, কাউকে দেখিনি তো প্রতিরোধ করতে? কার এতো সাহস যে নবীনগরে কাজী মামুনকে বাঁধা দেয়? কাজী মামুন বলেন, রাতের আঁধারে আসিনি, প্রকাশ্যদিবালোকে এসেছি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। দূস্থদের মুখে আহার তুলে দিতে। ঢাকায় বসে অফিস কেন্দ্রিক বড় বড় কথা বলা লোকের অভাব নেই, কিন্তু সত্যিকার অর্থে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো মানুষের সংখ্যা অনেক কম। তিনি বলেন, কোনো ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতা বা দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে আসিনি। তবে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা আছে, তা নিশ্চয় সফল অনুষ্ঠানই প্রমাণ করে। মাজার জিয়ারত ও ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএলডিপি’র চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, সাবেক এমপি ও জাতীয় পার্টি নেতা জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, জাপার কেন্দ্রীয় নেতা মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিকদার আনিস, অ্যাডভোকেট সোয়েব আহমেদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মানবিক পার্টির চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, পূর্ণগঠন প্রক্রিয়ার দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. ইদ্রিস আলী, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা কাজী রুবায়েত হাসান, নাফিস মাহবুব, জাপা নেতা এমএ জাহের, পুর্ণগঠন জপার জেলা আহবায়ক অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, জেলা জাপার যুগ্ম আহবায়ক ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা জাপার আহবায়ক অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, জেলা জাপার সদস্য সৈয়দ মোকাব্বির হোসেন, জাপা নেতা নজরুল ইসলাম, নবীনগর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন মৃধা, জেলা জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি সৈয়দ মোদাব্বের হোসেন ও যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জয়নাল আবেদীন বাবু, পৌর জাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস, নবীনগর জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি হাফছা সুলতানা স্মৃতি, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিশু আহমেদ, নবীনগর উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন জাপার নেতৃবৃন্দসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।