* অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে
* সত্যকে মুছে ফেলা যায় না
মিরর বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যে গণতন্ত্র ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিল, জিয়ার পকেটে ছিল বা এরশাদের পকেটে ছিল বা খালেদা জিয়ার ব্যাগে ছিল, সেটাকে আমরা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। জনগণের ক্ষমতায়ন আমরা করেছি। সেখানে যদি বিএনপির নেতারা গণতন্ত্র না দেখে, আর উন্নয়ন না দেখে তাহলে তো বলার আর কিছু থাকে না।’
রবিবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতিরা সভায় বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের জন্ম সামরিক ছাউনি থেকে তারাই আজকে বলছে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছি। যাদের হাতে গণতন্ত্র ধ্বংস তাদের কাছ থেকেই গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয় এটাই হচ্ছে দু:খজনক।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র জনগণের হাতে আমরা ফিরে দিয়েছি। যে গণতন্ত্র ক্যানটনমেন্টে বন্দি ছিল, জিয়ার পকেটে ছিল বা এরশাদের পকেটে ছিল বা খালেদা জিয়ার ব্যাগে ছিল, সেটাকে আমরা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। জনগণের ক্ষমতায়ন আমরা দিয়েছি। সেখানে যদি বিএনপির নেতারা গণতন্ত্র না দেখে, আর উন্নয়ন না দেখে তাহলে তো বলার আর কিছু থাকে না।’ প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন,বাংলাদেশের জনগণ ওদের ভোট দেবে কেন? ওদের নেতা কে?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (বিএনপি নেতাদের) একটা গুণ আছে, তারা মিথ্যা কথাটা ভালোভাবে বলতে পারে। সেই ভাঙা ছুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জি থেকে কোকো লঞ্চ ১, ২, ৩, ৪ বের হলো, ড্যান্ডি ডাইং বের হলো, তারপর কত কিছু তো বের হলো। যাত্রা তো ভাঙা ছুটকেস ছেঁড়া গেঞ্জি নিয়ে। যারা দুর্নীতি করে অর্থ পাচার করে। খালেদা জিয়ার ছেলের পাচার করা অর্থ ফেরতও এনেছি। এরা দুর্নীতির কথাইবা বলে কিভাবে, ভোটের কথাই বা বলে কি করে? উন্নয়ন চোখে পড়েই না কি করে?
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের জনগণ ওদের ভোট দেবে কেন? ওদের নেতা কে? এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী অথবা গ্রেনেড হামলা, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, অর্থ পাচারকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছে তাদের দলের নেতা, তো সেই দলকে মানুষ কেন ভোট দিতে যাবে? মানুষ তো ভোট দেবে না। মাটি ও মানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। আমরা যে ওয়াদা করেছি সেই ওয়াদা পূরণ করেছি। সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, আর বাংলাদেশকে কেউ পেছনে টানতে পারবে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। জনগণের উন্নয়নই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। জাতির পিতার যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ গড়েছিলেন, সেই জয় বাংলা ফিরে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আজকে প্রতিষ্ঠিত। আজকে বাংলাদেশের মানুষকে আর কোনো বিকৃত ইতিহাস শুনতে হবে না। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আদর্শ নিয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। বাংলাদেশ সম্মান নিয়ে চলবে। উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা পাবে। এটাই আমাদের আজকের প্রতিজ্ঞা।
অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে :
বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এটাই আমাদের আকাক্সক্ষা। পাশাপাশি শিগগিরই দেশের সকল ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের আবাসন নিশ্চিত হবে।’
রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আমরা ২০২১ সালেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আজকে আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। সকল ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের জন্য বিনা পয়সায় ঘর তৈরি করে দিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের একটাই লক্ষ্য যে বাংলাদেশটাকে আবার আমরা স্বাধীনতার চেতনায় ফিরিয়ে আনব। আমরা স্বাধীনতার আদর্শে বাংলাদেশকে গড়ে তুলব। ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে।’
বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময় ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করার যে সুযোগটা পেয়েছি এবং এর পূর্বে আমরা স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীও উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছিলাম এর জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে অনুষ্ঠিত সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে থাকা মন্ত্রীপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সমাজের বিশিষ্ট জন, সরকারের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সত্যকে মুছে ফেলা যায় না :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিলো, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। আসলেই ইতিহাস সব সময় প্রতিশোধ নেয়। সত্যকে মুছে ফেলা যায় না, আজকেই সেটাই প্রমাণ হয়েছে।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসএসএফের (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সদরদপ্তরে ‘মুজিব কর্নার’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ও জয় বাংলা নিষিদ্ধ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের কয়েকটি গান ছিল, যে গানগুলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিত, সেগুলো ছিল নিষিদ্ধ। কোথাও বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকলে, সেটা হয় কাগজ দিয়ে বন্ধ করা হতো, না হয় আঙুল দিয়ে ঢেকে রাখা হতো। দেশের মূল ইতিহাসটাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর প্রবাসে ছিলাম রিফিউজি হিসেবে, কিন্তু নাম-পরিচয়টা দিতে পারেনি। কারণ, নিরাপত্তার স্বার্থে যে দেশে আশ্রয় নিয়েছিলাম, তাদের এটাই ছিল নির্দেশ।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এই শোক-কষ্ট সহ্য করা কতো কঠিন। তারপরও আমার জীবনের একটা প্রতিজ্ঞা ছিল। জীবনে একদিন না একদিন সময় আসবে। কারণ এতো আত্মত্যাগ কোনো দিন বৃথা যেতে পারে না।