ছবিটা এখন স্মৃতি। সবাই আছে নেই আব্দুল ওয়াদুদ
★ টিমগ্রুপের সিওও প্রয়াত আব্দুল ওয়াদুদকে নিয়ে বন্ধু প্রবাসী সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদের স্মৃতিচারন★
★ সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ খোকন★
১৯৮৩ সালের কথা। আমি তখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়তাম ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মুসলিম মর্ডাণ একাডেমী স্কুলে। আর সেই স্কুলের আমার সহপাঠি ছিল আব্দুল ওয়াদুদ অরুণ।
আর সে এই সপ্তাহে (গত মঙ্গলবার রাতে) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।
ছবি : প্রয়াত আব্দুল ওয়াদুদ
জানা গেছে, গত ৫ই মে নিজের গাড়ির চালক থেকে করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন আবদুল ওয়াদুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পরে তার গাড়ি চালকসহ পরিবারের সদস্যদের রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে ওয়াদুদ কোরনা টেষ্টে নেগেটিভ পাওয়া গিয়েছিল এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তাঁর লিভারেরও বেশ ক্ষতি হয়েছিল।
আমার দেখা বন্ধু আব্দুল ওয়াদুদ ছিল-একটি হাস্যজ্জল মুখ ও সাদামাঠা মানুষ। সে মেধাবী ছাত্রও ছিল। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পোশাক খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের টিম গ্রুপের প্রধান অপারেটিং অফিসার (সিওও) ছিলেন। পরিশ্রম করে অনেক দূর গিয়েছিলেনও বটে।
এ বৎসরের শুরুতে মুসলিম মর্ডাণ একাডেমী স্কুলের পুনর্মিলনী আনুষ্ঠানে আব্দুল ওয়াদুদসহ ও প্রবাসী বন্ধুরা আংশগ্রহণ করলেও আমি সিডনি থেকে যেতে পারিনি। পুনর্মিলনীতে ১৯৮৬ ব্যাচের বন্ধুদের ওর গার্মেন্টসের (পুনর্মিলনী লগো সম্বলিত) গেজ্ঞি বিতরন করেছিল।
আমার বাবা আর্মীতে চাকুরী ছিল সেই সুবাধে অন্যত্র বদলী হওয়ার কারণে একই ক্লাসে দুবার পড়তে হয়েছে। যার কারণে আব্দুল ওয়াদুদ নির্ধারিত ইয়ারে (এসএসসি ব্যাচ-১৯৮৬) স্কুল পার করেছে আর আমি ১৯৮৭তে। আব্দুল ওয়াদুদের সাথে শুধু একটা বৎসরই পার করেছি। আর দেখা করার সুযোগ আসতে আসতে ওকে চিরতরে হারিয়ে ফেললাম। জীবন সংগ্রামের ব্যস্ততার কারণে হয়তো নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখা হয়ে ওঠে না। কিন্তু দিনশেষে এরাই গেঁথে থাকে অন্তরে, বাস্তবে সচরাচর দেখা না মিললেও স্মৃতির পাতায় আজীবন রয়ে যায় অমলিন।
ছবি : বন্ধুদের কাছে আব্দুল ওয়াদুদের ছবি এখন স্মৃতি
স্কুল, বন্ধু, শৈশব সবকিছুই আবার ফিরে পেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তাতো আর হওয়ার নয়। সময়ের স্রোত অতীত ফিরিয়ে দেয় না। তাই স্মৃতি হাতড়ে বেঁচে থাকতে হয় জীবনভর। আমাদের ক্লাশমেটদের স্মৃতিতে অনেকখানি জায়গা জুড়ে আছে অরুণ। আল্লাহ তোকে ওপারে ভালো রাখুক।