* সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের যে সেতু বন্ধু হয়েছে : বস্ত্র মন্ত্রী
* মাদকের সঙ্গে জড়িতরা সুশীল সেজে আমাদের পেছনেই দাঁড়িয়ে থাকে : শামীম ওসমান
সম্মাননা গ্রহন করছেন কমিউনিটি পুলিশিং অফিস সম্পাদক মোহাম্মাদ কামাল হোসেন
মিরর বাংলাদেশ : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, কোন একটি ঘটনা ঘটলে পুলিশ খবর পাবে, তারপর আসবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাল্য বিবাহসহ সামাজিক কিছু অপরাধ আছে, এ গুলো ঘটে গেলে পুলিশ গিয়ে কোন লাভ হয় না। তাই ঘটনার আগেই নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন হয়। আর এটা সম্ভব একমাত্র কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের মাধ্যমে। তাই কমিউনিটি পুলিশিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার দুপুরে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মূলমন্ত্র, শান্তি-শৃঙ্খলা সর্বত্র’ স্লোগানকে সামনে রেখে দিবসটি উপলক্ষে সাড়ে ১০টায় বর্নাঢ্য র্যালি বের হয়। এরপর আলোচনা সভা করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল’র সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ।
মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের যে সেতু বন্ধু হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। কমেছে বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতনের মতো সামাজিক অপরাধ। এখানে কমিউনিটি পুলিশিং মেম্বারদের দায়িত্ব হচ্ছে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করা। এ প্রক্রিয়া চালু থাকলে অপরাধ দমন সম্ভব হবে।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, মাদকের সাথে অর্থ জড়িয়ে আছে, তাই মাদক নিয়ন্ত্রণ অনেক বড় সমস্যা। তার উপর আইনও দূর্বল। অনেক সময় দেখা যায়, পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে পাঠিয়েছে। কিন্তু মাত্র ৪-৫ দিন পরেই ছাড়া পেয়ে গেছে। এখানে পুলিশেরও কিছু করার থাকে না। মাদক আইন সংশোধন করা জরুরি। মাদক নিয়ন্ত্রণের আইনও যদি কঠোর করা হয়, তাহলে নারী নির্যাতনের মতোই এই অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার (সিপিও) হিসেবে রূপগঞ্জ থানার এসআই হামিদুর রহমান এবং বন্দর থানা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন আনু, জেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সহ-সভাপতি কাওসার আহাম্মেদ পলাশ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিহির, অফিস সম্পাদক মোহাম্মাদ কামাল হোসেন ও ফতুল্লা কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি মোস্তফা কামাল সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান বলেন, ‘মাদকের সঙ্গে জড়িতরা সুশীল সেজে আমাদের পেছনেই দাঁড়িয়ে থাকে। ভালো মানুষ সাজে, কিন্তু দেখা যায় আমাদের পেছনে যে আছে সে মাদক বিক্রি করছে। মাদক যে খায় সে তো অসুস্থ। তাকে আমি ঘৃণা করি না। এতে আমি কষ্ট পাই। কারণ মাদক খাওয়ার চাইতে যে বিক্রি করতেছে সে বেশি অপরাধী।’
শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর আগে মাদকের টাকার জন্য পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে ঐশি ঘুমের মধ্যে তার বাবা-মাকে জবাই করে হত্যা করেছিল। ওই মেয়েটা কি সুস্থ? সে তো সুস্থ ছিল না। কিন্তু যে মাদকটা দিয়েছে সে কিন্তু সুস্থ ছিল। তাই বলতে চাই এখানে আমরা যারা আছি সকলের একসঙ্গে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, র্যাব-১১ অধিনায়ক (সিইও) তানভীর মাহমুদ পাশা, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সাবেক সভাপতি ডা. শাহ নেওয়াজ চৌধুরী, কমিউনিটি পুলিশং জেলা কমিটির সহ-সভাপতি কাওসার আহাম্মেদ পলাশ, অফিস সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সোনারগাঁও উপজেলার চেয়ারম্যান এড. শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী, ফতুল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন, ফতুল্লা কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি মোস্তফা কামাল, বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন মো. মাহাবুব রহমান বাবুল, শিপন সরকার প্রমুখ।