নির্বাচন বাতিলের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে দেশবাসী : প্রধানমন্ত্রী

310

* টুঙ্গিপাড়া ও মাদারীপুরের আওয়ামীলীগের নির্বাচনী জনসভা

মিরর বাংলাদেশ  : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষকে ক্ষমতায় আনতে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিলের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে দেশবাসী।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বাতিলের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অনেকে আন্তর্জাতিকভাবেও জড়িত। তারা বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষকে ক্ষমতায় আনার জন্য কাজ করছে। আমরা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেবো।’
শনিবার সকালে টুঙ্গিপাড়ায় সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। টুঙ্গিপাড়া ছাড়াও মাদারীপুরের কালকিনিতে নির্বাচনী জন সভায় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন । প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সোয়া ১১টায় সমাবেশস্থলে পৌঁছান এবং সমাবেশে জাতীয় পতাকা নেড়ে জনতাকে শুভেচ্ছা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি আমাদের নির্বাচন। নৌকা মার্কায় আমরা ভোট করবো। আপনারা সকালে সবাই সশরীরে এসে ভোট দিয়ে এই বিশ্বকে দেখাবেন যে, এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং আমরা তা করতে জানি ও করতে পারি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আমরা করতে পারি।’আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তিনি চান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক।
তিনি বলেন, ‘আমি ৩০০ আসন দেখি। আর আমাকে দেখেন আপনারা। কাজেই এটাই হচ্ছে আমার সব থেকে বড় পাওয়া, আমার মতো একজন সৌভাগ্যবান প্রার্থী বাংলাদেশে আর নেই। এটা হলো বাস্তবতা। তার কারণ আপনারা। আপনারাই আমার দায়িত্ব নেন। আপনারা আমাকে দায়মুক্ত করে রেখেছেন বলেই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করতে পারছি।’
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি একজন প্রার্থী হিসেবে নৌকা মার্কায় ভোট চাই, ভোট দেবেন তো?’তার এই প্রশ্নের উত্তরে সমস্বরে জনতা দুই হাত তুলে ভোট প্রদানের সম্মতি জানায়। ‘আমি জানি আপনারা দেবেন’, প্রতিউত্তর দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দিনবদলের সনদ দিয়েছিলাম। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল দিকে আজ বাংলাদেশ উন্নয়ন করেছে। বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, আমাদের লক্ষ্য ২০৪১। এই ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের অগ্রগতি। আমরা সেই তারুণ্যকেই স্মার্ট তরুণ সমাজ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়তে চাই। কারণ আমাদের লক্ষ্য আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা স্মার্ট পপুলেশন। আমাদের সরকার হবে স্মার্ট, আমাদের ইকোনমি হবে স্মার্ট, আমাদের সমাজ হবে স্মার্ট।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করছি। ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। বিশ্বে আমরা উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতির মর্যাদা লাভ করেছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মিলিটারি ডিক্টেক্টর জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। জাতির পিতা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। জিয়া ও এরশাদ সেই উন্নয়ন ধ্বংস করে গেছে। তাদের হাত ধরে তৈরি রাজনীতি দেশের জন্য কিছুই করতে পারেনি। আমরাই দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাই।
২০০১ সালের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারার কারণ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কাছে প্রস্তাব করা হলো গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমরা ওই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। ফলে গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব বিএনপির কাছে দেওয়া হলো। বিএনপি ওই প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় তাদের ক্ষমতায় বসানো হয়। আমি জাতির পিতার কন্যা হিসেবে দেশের সম্পদ বিক্রি করতে রাজি হইনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়েছি। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছি আমরা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের এতো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ করবো। আমরা সেটা করেছি। এখন দেশের প্রতিটি নাগরিকের হাতে হাতে মোবাইলফোন, এগুলো আমরাই দিয়েছি। দেশের মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্যই আমরা কাজ করছি।
##