স্থানীয়রা জানান, এক সন্তানের জননী ফারহানা ইয়াসমীন গাংনী উপজেলা আওয়ামী মহিলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। ফারহানা ইয়াসমিন তার প্রয়াত স্বামী সাহাবুদ্দীন জীবিত থাকা অবস্থায় গোলাম সারোয়ার সবুজের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বেশ কিছু দিন ধরে গোলাম সারোয়ার সবুজ ফারহানার বাড়িতে যাতায়াত করতেন। ফারহানা ও গোলাম সারোয়ার সবুজের আচরণে স্থানীদের মাঝে নানা সন্দেহের সৃষ্টি হয়। গোলাম সারোয়ার সবুজ বেলা ১১টায় ফারহানার বাড়িতে আসলে স্থানীয় লোকজন তাদের আটকে রাখে।
ছবি : বিয়ের কাবিননামায় সই করছেন যুুবলীগ নেত্রী।
খবর পেয়ে গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক ও পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম, গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ওবাইদুর রহমান, স্থানীয় কাউন্সিলর আছেল উদ্দীন, কাউন্সিলর নবীর উদ্দীন, শ্রমিক নেতা মনিরুল ইসলাম মনিসহ প্রতিবেশীরা ফারহানার বাড়িতে ছুটে আসেন।
জনপ্রতিনিধিদের কাছে ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন দাবি করেন, গোলাম সারোয়ার সবুজ তার ছোট ভাই। বিভিন্ন প্রয়োজনে তিনি তার বাড়িতে যাতায়াত করেন। তার সঙ্গে কোনো অনৈতিক সম্পর্ক নেই।
কিন্তু সম্পর্কের বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহের সৃষ্টি হওয়ায় গোলাম সারোয়ার সবুজের ম্যাসেঞ্জার পরীক্ষা করে কিছু অশ্লিল ছবি ও কথাবার্তা পাওয়া যায়। পরে উভয়ের সম্মতিতে ২০ লাখ টাকা দেন মোহরে তাদের বিয়ে হয়।
মেয়েপক্ষের উকিল পৌর মেয়র আশরাফুল জানান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীদের উপস্থিতিতে ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিনের সঙ্গে তার প্রেমিক গোলাম সারোয়ার সবুজের সঙ্গে ২০ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। মেয়েপক্ষের দুজন স্বাক্ষী হলেন কাউন্সিলর আছেল উদ্দীন ও শ্রমিক নেতা মনিরুল ইসলাম মনি।
বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কাজি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘২০ লাখ টাকা বাকি দেনমোহরে ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন ও গোলাম সারোয়ার সবুজের বিয়ে হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মুহসিনুল কবির ওরফে মহাসিন হুজুর।’
বিয়েতে উপস্থিত নেতারা জানান, বিয়ের সময় ছেলের বাবা, চাচা ও তাদের স্থানীয় ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
গাংনী থানার ওসি মো. ওবাইদুর রহমান জানান, মেহেরপুর এলাকার একটি ছেলেকে নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিনের বাড়িতে ঝামেলা হয়েছে বলে খবর পাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে অন্য পুলিশ সদস্যদের রেখে গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় চলে এসেছি। পরে জানতে পেরেছি, ২০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়েছে।’
গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক বলেন, ‘ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি, ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন ও গোলাম সারোয়ার সবুজের মধ্যে দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের জেরে গোলাম সারোয়ার সবুজ প্রায় প্রতিনিয়ত ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিনের বাড়িতে যাতায়াত করত। ঘটনার সময় দুজন একবাড়িতে রয়েছে মর্মে খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন হৈচৈ শুরু করে। পরে দুজন দুজনকে ভালোবাসা ও অনৈতিকতার বিষয়টি প্রকাশ পেলে তাদের সম্মতিতে বিয়ে দেয়া হয়।’