মিরর বাংলাদেশ: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পরিবার বা দলের নেতাদের কথায় দন্ডিত আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। চিকিৎসকরা তার চিকিৎসার প্রয়োজনে কোনও সুপারিশ করলেই কেবল তা বিবেচনাযোগ্য। আর যেহেতু মানবিক কারণ বা চিকিৎসার জন্য তার জামিন আবেদন আদালত একাধিকবার নাকচ করে দিয়েছে, তাই পরিবারের আবেদনে বা মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সুযোগ নেই।’
দলের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদনের বিষয়ে সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এই কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়া দন্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন। আদালত তার জামিন আবেদন একাধিকবার নাকচ করেছেন। এখন পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবিক কারণে চিকিৎসার্থে তার মুক্তি চেয়ে যে আবেদন করা হয়েছে তার মূল্য নেই। কেননা খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা প্রয়োজন একথা শুধু তার দলের নেতা বা পরিবারের লোকজন বলছেন। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা সে কথা বলছেন না। তাই স্বভাবতই দল বা পরিবারের কথায় তার জামিন বা মুক্তির সুযোগ নেই।’
করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার
সাংবাদিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত। এ ভাইরাস প্রতিরোধে সব ধরনের সতর্কতা ও প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে অনুযায়ী রাজধানী ঢাকার সব হাসপাতালে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা-উপজেলার হাসপাতালগুলোও প্রস্তুত রয়েছে। করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে করণীয় আছে। তা হলো সতর্ক থাকা, যেখানে-সেখানে ময়লা না ফেলা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, ‘জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই জনসমাগম এড়াতে মুজিববর্ষের কর্মসূচি পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। বিদেশি অতিথিরা আসবেন বলে যারা এ নিয়ে রাজনীতি করছেন তা সঠিক নয়। মুজিববর্ষের কর্মসূচি পুনর্বিন্যাস করায় কোনও রাজনীতি নেই, আছে জনকল্যাণের চিন্তা।’
তিনি বলেন, ‘দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর যারা মাস্ক, হ্যান্ডওয়াশের কৃত্রিম সংকট তৈরি করার চেষ্টা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অভিযান শুরু করেছে যা আরও জোরদার করা হবে।’
১৭ মার্চ মুজিব জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচি
ওবায়দুল কাদের ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের পুনর্বিন্যস্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন করা হবে। সেদিন সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে। দলীয় ও জাতীয় পতাকা ওড়ানো হবে। দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। গরিব ও দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে। দেশের সব গণমাধ্যমে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে। আর রাত ৮টায় বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণে একযোগে সারাদেশে আতশবাজি ফোটানো হবে। এছাড়া পুরো মুজিববর্ষে দলের পক্ষে বৃক্ষরোপণ এবং গৃহহীনদের ঘর দেওয়া হবে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, আগামী ১২ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যাত্রাবাড়ী-ভাঙ্গা এক্সপ্রেস হাইওয়ে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে মুজিববর্ষ সফল হবে না−বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে দÐিত হয়ে কারাগারে আছেন। তিনি কারাগারে থাকলে মুজিববর্ষ সফল হবে না, এমন কথা বালকসুলভ বক্তব্য।