পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনঃ Dehydration
…..…….……………………………..
ডাঃ এ.এস.এম. মনিরুল আলম
এম.বি.বি.এস.(ঢাকা), এম.এস.(অর্থ)এম.এম.এড।
অধ্যাপক ও পরিচালক
ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
অনুলিখনঃ নয়ন ওঝা (কমিউনিটি প্যারামেডিক)
সংজ্ঞাঃ শরীর থেকে পানি কমে যাওয়াকে পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন বলে। শরীরে ৭০% পানি থাকে। ৪১ লিটার পানির মধ্যে ১৪ লিটার কোষের বাইরে এবং ২৮ লিটার কোষের ভিতরে থাকে।
#পানি শূন্যতার প্রকারভেদঃ
রোগের পতিব্রতার উপর দুই(২) ভাগে ভাগ করা যায়, যেমনঃ
১, সাম ডিহাইড্রেশন বা অল্প পানিশূন্যতা।
২ সিভিয়ার ডিহাইড্রেশন বা মারাত্মক পানি শূন্যতা।
#১, সাম ডিহাইড্রেশন বা অল্প পানিশূন্যতার লক্ষন ও চিকিৎসা, যেমন,
১,পিপাসা লাগবে.
২,প্রসাবের পরিমাণ কমে যাবে.
৩,অস্থিরতা থাকবে.
৪,চোখে পানি আসবে না(কান্নার সময়)
৫,মুখ ও জিহবা শুকনো থাকবে.
৬,দেহের ওজন ৫% কমে যাবে.
৭,চোখ বসে যাবে.
৮, চামড়ার ইলাস্টিসিটি বা মর্শিন ভাব কমে যাবে.
৯, বাচ্চাদের মাতার তালু বসে যাবে।
#২ সিভিয়ার ডিহাইড্রেশন বা মারাত্মক পানি শূন্যতার লক্ষন ও চিকিৎসা। যেমনঃ-দেহের ওজন ১০% এর বেশী কমে যাওয়াকে বলে। চামড়ার ইলাস্টিসিটি বা মর্শিন ভাব বেশি কমে যাবে.
১, প্রসাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে.
২,বাচ্চা পানি বা বুকের দুধ ও কেতে পারবে না.
৩,চোখ মারাত্মক ভাবে বসে যাবে এবং খিচুঁনি হতে পারে.
৪,রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে.
# চিকিৎসাঃ
১, চালের স্যালাইনঃ- চাল,ভুট্টা, বার্লি,লবন দিয়ে তৈরী খাবার বার বার খাওয়াতে হবে।
২, ও.আর.এস বার বার খাবে।যেমনঃ-
৪ মাস বয়স প্রর্যন্ত, ওজন ৫ কেজির কম ২০০-৪০০মি.লি।
৪-১১মাস বয়স প্রর্যন্ত, ওজন ৫-৮ কেজির মধ্যে ৫০০-৬০০মি.লি।
১২-১৩মাস বয়স ওজন ৮-১১ কেজির মধ্যে ৬০০-৮০০মি.লি।
২-৪ বৎসর, ওজন ১১-১৬কেজির মধ্যে ৮০০-১২০০মি.লি।
৫-১৪ বৎসর, ওজন ১৬-৩০ কেজির মধ্যে ১২০০-২২০০মি.লি।
বড়দের, ওজন ৩০ কেজির মধ্যে ২৫০০-৪০০০মি.লি।
৩, পানি, বুকের দুধ, খাবার (স্বাভাবিক) খাবে।
৪, ডিহাইড্রেশনের লক্ষন দূর হচ্ছে কিনা লক্ষ্য রাখতে হবে।যদি বাচ্চা বমি করে, ১০ মিনিট অপেক্ষা করে অল্প অল্প দিতে হবে। বাচ্চার মুখ, চোখের পাতা ফুলে গেলে বন্ধ করতে হবে। যদি এ ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দূর না হয়, তবে সিভিয়ার ডিহাইড্রেশনের চিকিৎসা দিতে হবে।
√ বাচ্চাদের মা বা গার্ডিয়ান দের ভালো ভাবে এই উপদেশ বুঝতে হনে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
#২ সিভিয়ার ডিহাইড্রেশন বা মারাত্মক পানি শূন্যতর চিকিৎসাঃ
১। মুখ দিয়ে খাবে, খেতে না পারলে নিম্নের নিয়মানুযায়ী কনফিউশন/ সেলাইন দিতে হবে- কলেরা/হার্টম্যানস/ নরমাল / ডি.এন.এস দিয়ে নিম্নের রেটেঃ
> বয়স ১২ মাসের কম
১ম দেবেন ৩০ মি.লি/পার কেজি, ১ ঘন্টায়, পরে দেবেন ৭০মি.লি/পার কেজি ৫ ঘন্টায়।
> বড়দের
১ম দেবেন ৩০ মি.লি/পার কেজি, ১/২ ঘন্টায়, পরে দেবেন ৭০মি.লি/পার কেজি ২-১/২ ঘন্টায়
√ যদি স্যালাইন শিরায় না দেয়া যায়, তবে রাইলস টিউব দিয়ে ১২০মি.লি/ কেজি হিসেবে ৬ ঘন্টায় দিতে হবে।
√ হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে
√ ডিহাইড্রেশনের ১ম দিন ১টি, ২য় দিন ১টি, একমাস পরে ১টি দিবেন ভিটামিন এ ক্যাপসুল/ vitamin A Cap. Retinal Forte/A A – Fourte।
√ এই সময়ে একটু মুখে ও গলা শুকিয়ে আসতে পারে ভয় পাবেন না সিভিট,লবঙ্গ,জষ্ঠিমধু মুখে রাখতে পারেন,
বেশি করে পানি পান করুন, জ্বর, ঠান্ডা, কাশি হলে ঘরে বসেই চিকিৎসা নিন।
√ বিশেষ প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন,
নয়ন ওঝা (কমিউনিটি প্যারামেডিক)
০১৭১৪৮২৩৭৬৬.