মিরর বাংলাদেশ: করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ফরিদপুরের দু’টি পতিতাপল্লীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন থেকে এ ঘোষণা কার্যকর করা হয়।
ফরিদপুরের সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম রেজা এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের নির্দেশনায় শনিবার দুপুর থেকে শহরের রথখোলা ও সিএন্ডবি ঘাট পতিতাপল্লী দু’টিকে ‘লকডাউন’ করা হয়েছে।
তিনি জানান, এখন থেকে এ দু’টি স্থানে জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাসুম রেজা বলেন, শহরের এ পতিতাপল্লী দু’টিতে জায়গা কম, ঘিঞ্জি পরিবেশ এবং বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের সমাগম হয়ে। এতে সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের পরামর্শে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সরকারি হিসেবে এ দু’টি নিষিদ্ধ পল্লীতে প্রায় তিন শতাধিক পতিতা রয়েছে বলে জানান তিনি। তাদের সাথে রয়েছে সর্দারনী, বাড়িওয়ালী ও তাদের শিশু সন্তানেরা। তবে বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশি বলে জানা গেছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম রেজা বলেন, মানবিক কারণে এই অন্তবর্তীকালীন সময়ে পতিতাদের মাঝে খাদ্য সহায়তা হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে এক-দুইদিনের মধ্যে প্রত্যেক পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া সেখানকার বাড়ির মালিকদের এই সময়ের জন্য পতিতাদের কাছ থেকে ঘরভাড়া না নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি মো: মোরশেদ আলম জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এ দু’টি নিষিদ্ধ পল্লীর প্রবেশপথে পুলিশ পাহারা জোরদার করা হয়েছে।
ফরিদপুর রথখোলা পতিতাপল্লীর নেত্রী শিউলি পারভিন জানান, শুধু চাল দিলেই তো হবে না। আমাদের জীবনধারণের অন্যান্য উপকরণেরও প্রয়োজন। সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসাথে আমাদের নিররাপত্তাও দিতে হবে।
এদিকে, আজ শনিবার পর্যন্ত ফরিদপুরে বিদেশ ফেরত ৬২১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়াও গত ৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত ৪২৫৬ জন বিভিন্ন দেশ থেকে দেশে এসে ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।