* বরিশালে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী জনসভা
মিরর বাংলাদেশ : আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার অধিকার বাংলাদেশে নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, আর ওদের রাজনীতি মানুষ হত্যায়। তাদের কী মানুষ চায় বলেন? তাদের মানুষ চায় না।
শুক্রবার বিকেলে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল ১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতি মÐলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপদেষ্টা মÐলির সদস্য আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন, আবদুল হাফিজ মল্লিক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স ম রেজাউল করিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ-ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, আওয়ামী-যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, জাতীয় পাটির (মঞ্জু) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, শাজাহান ওমর বীর উত্তম, আলীগের দপ্তর সস্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বরিশাল মহনগর আলীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গির, সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার বিকাল ৩টা পাঁচ মিনিটের দিকে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভার মঞ্চে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনি জনসভায় যোগ দিতে শুক্রবার দুপুর ১টায় বরিশাল সার্কিট হাউজে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এর আগে শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নির্বাচনি জনসভা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করি, তখন ওই বিএনপি-জামায়াত করে অগ্নিসন্ত্রাস। রেললাইনের ফিস প্লেট ফেলে দিয়ে, বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার ফাঁদ পাতে। রেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। মা-সন্তানকে বুকে জড়িয়ে রেখেছে- এই অবস্থায় আগুনে পুড়ে কাঠ হয়ে গেছে। এই দৃশ্য পুরো বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। আসে আগুন, গাড়িতে আগুন, ঠিক ২০০১ সালে শুরু করেছিল। এরপর ১৩-১৪ একই ঘটনা ঘটায়। এখন আবার অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। আমি ধিক্কার জানাই বিএনপি-জামায়াতকে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমি বরিশালে উপস্থিত হয়েছি। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন, সেই লক্ষে এখানে উপস্থিত হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শূন্য হাতে বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ ডলার। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার তিন বছরের মধ্যে তা ২৭৭ ডলারে উন্নীত করেন। তিনি অসহায়দের জন্য অকাতরে সব বিলিয়ে দেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যা নয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছিল। এরপর অবৈধভাবে জিয়া, এরশাদ ক্ষমতায় আসে। তারা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারেনি। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ উন্নয়নে দেশের সোনালী সময় ছিল। দুর্ভাগ্য চক্রান্ত করে ২০০১ সালে আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। বরিশালে নেতাকর্মীদের যে নির্যাতন করা হয়েছিল তা অবর্ননীয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ ছিল মানুষের সবচেয়ে বড় অন্ধকার যুগ। বরিশাল থেকে ২৫ হাজার লোক গোপালগঞ্জে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। বিএনপির দুঃশাসনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে আমাদের ক্ষমতায় রেখেছে। আজ ২০২৩ সাল, আমরা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে। আজকে দুর্ভিক্ষ নেই, মঙ্গা নেই। যে মানুষ একবেলা খেতে পারতো না। তারা তিন বেলা খেতে পারছে। বই বিনামূলে বিতরণ করছি। অসহায়দের ভাতা দিচ্ছি। আজকে ১০ কোটি মানুষ উপকারভোগী। আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে শিল্প কলকারখানা চালিয়ে আসছি। ১০ টাকায় কৃষকরা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। ১ কোটি ২ লাখ কৃষক অ্যাকাউন্ট খুলে ভর্তুকির টাকা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, বরিশাল এক সময় ছিল শস্য ভান্ডার। আবার আমরা সেই ভান্ডারের সুনাম ফেরাতে সাইলো নির্মাণ করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বরিশাল ছিল অন্ধকার। আওয়ামী লীগ সরকার এসেছে, বরিশালে আলো এসেছে। আমরা কথা দিয়েছিলাম, কথা রেখেছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। এই বাংলাদেশে কেউ হতদরিদ্র থাকবে না। প্রত্যেকের ঘর হবে, বাড়ি হবে, কাজ করে খেতে পারবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকায় নিচ্ছি। ভবিষ্যতে বরিশালে নিয়ে আসবো। যাতে করে শিল্প কারখানা গড়ে ওঠতে পারে। বরিশালেও যদি কেউ ভূমিহীন থাকে তাহলে আমরা তাকে ঘর করে দেবো। বেদে, হিজড়াসহ সবাইকে আমরা ঘর করে দেবো, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। মসজিদ, মন্দির, গির্জা করে দিয়েছি। শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বাড়িয়েছি। সবার বেতন-ভাতা বাড়িয়েছি। পেনশন স্কিম করেছি সকলের জন্য। আমরা উন্নয়ন করেছি, উন্নয়ন করবো। ঘরে বসে বিদেশের কাজ করে পয়সা উপার্জন করছে, মোবাইল-ফোন, ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ।