মিরর বাংলাদেশ : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গ্রেফতারকৃত জেলা ছাত্রদল সহ-সভাপতি সাগর সিদ্দিকি কে মামুন মাহমুদের উপর হামলার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পল্টন থানা পুলিশ।
বুধবার সকালে তাকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পল্টন থানার উপপরিদর্শক জাহিদ জানায়,সাগর কে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে তিনদনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে বিজ্ঞ আদালত। সাগর ফতুল্লা থানা শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি তুষার আহমেদের মিঠুর ছেলে। এর আগে সোমবার রাতে রাজধানীর পুরানা পল্টনে মামুন মাহমুদ কে ছুরিকাঘাত করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে জুয়েল মীর নামক এক হামলাকারীকে পিটুনী দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশ মঙ্গলবার সকালে তাকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। অপরদিকে আহত মামুন মাহমুদ এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সোনারগাঁওয়ে ফজলুল হক মহিলা কলেজে শিক্ষকতা করেন। কয়েক বছর আগে ওই কলেজ থেকে তাঁকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।
পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেন্টু মিয়া জানান, ওই হামলার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলার একমাত্র এজাহারনামীয় আসামী জুয়েলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল জানিয়েছে, এক ব্যক্তি তাকে তিন হাজার টাকা দিয়ে মামুন মাহমুদকে কোপানোর জন্য দায়িত্ব দেয়। জুয়েল মিয়া পেশায় হকার। রাজধানীর বাসাবো এলাকায় থাকে। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দ্বলে বিএনপি নেতা মামুন মাহমুদকে হত্যা করতেই গিয়েছিল জুয়েল। কার সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছিল, তা তদন্ত চলছে। হামলায় তিনি ছাড়া আরও অন্তত তিনজন থাকলেও জুয়েল দাবি করেছেন, অপর ব্যক্তিদের তিনি চেনে না। আটক সাগর সিদ্দিকির বাবা তুষার আহমেদ মিঠু বলেন, তার ছেলে দলের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের শিকার।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্রদলের একটি কর্মসূচি শেষ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন মামুন মাহমুদকে দেখতে গেলে পুলিশ তাকে নিয়ে যায়। এর আগে এডঃ তৈমুর আলম খন্দকারের বাস ভবনে একটি মিটিংয়ে গেলে প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ তার ছেলে সাগর সিদ্দিকি কে হত্যার চেস্টা করা হয়। সেই ঘটনায় মামলাও হয়েছিলো।পরবর্তী সময়ে মামলা তুলে নিতে সাগর কে চাপ প্রয়োগও করা হচ্ছিলো। তার ধারনা সাগর কে পরিকল্পিত ভাবে মামুন মাহমুদের ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ফাসাঁনো হচ্ছে। জেলার এক স্বেচ্ছা সেনক দল নেতা ও যুবদল নেতা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আমার ছেলে সাগর সিদ্দিকি কে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেই। যারা ইতি পূর্বে আমার ছেলে সাগর কে হত্যার চেস্টা করেছিলো তারাই আমার ছেলে কে এই ঘটনায় ফাসিয়েছে।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, আহত মামুন মাহমুদ তাকে বলেছেন, চার যুবক সামনে থেকে এসে তাকে একসঙ্গে হামলা করে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যার চেষ্টা। তাছাড়া তিনি বলেন সাগর সিদ্দিকি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। ওর বাবা -চাচা দীর্ঘদিন আমাদের সাথে বিএনপির রাজনীতি করেছে। সাগর খুব ভালো ছেলে।সেও ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত।মামুন মাহমুদের সাথে সাগরের সাথে কোন দ্বন্ধ নেই।তাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক।
দলীয় একটি সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের অনুসারীরা এই হামলায় জড়িত থাকতে পারে। নেতাকর্মীদের সন্দেহের তীর গিয়াস উদ্দিনের অনুসারী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনের দিকে। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওই দুইজনকে ফোন দিলেও তারা তা রিসিভ করেননি। তবে হামলার রাতে ঘটনার কিছু সময় পূর্বে ঘটনাস্থলের আশপাশে কমিশনার ইকবাল ও তার অনুসারীদের দেখা গেছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।