ভারতকে বাদ দিয়ে মুজিববর্ষ পূর্ণতা পায় না : ওবায়দুল কাদের

788

মিরর বাংলাদেশ: মুজিববর্ষে নরেন্দ্র মোদিকে আমরা ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে আমন্ত্রণ বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান মিত্র দেশ ভারত। কাজেই ভারতকে বাদ দিয়ে মুজিববর্ষ পূর্ণতা পায় না। মুজিববর্ষে ভারতের প্রতিনিধিত্ব থাকতেই হবে। যারা আজকে নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধীতা করছে প্রকারন্তরে তারা মুজিববর্ষেরই বিরোধীতা করছেন।’ এছাড়া নরেন্দ্র মোদির বিরোধীতা করতে তাদের লজ্জা করে না? বলেও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

বুধবার সকালে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের বই ও সদস্য বই জেলা নেতাদের কাছে হস্তান্তর শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধীতাকারীদের উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, ‘মুজিববর্ষে আগমন উপলক্ষে আমরা নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ দিয়েছি। আমাদের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের প্রধান মিত্র দেশ ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে। সে ভারত থেকে প্রতিনিধিত্ব করবে। ভারতকে বাদ দিয়ে মুজিববর্ষ পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে না। ভারতের প্রতিনিধিত্ব থাকতেই হবে। মোদি আসছেন ভারতের প্রতিনিধ হিসাবে।’

তিনি বলেন, ‘মুজিবের জনপ্রিয়তা, যে মুজিবকে তারা নিষিদ্ধ করে রেখেছিল স্বাধীনতা দিবসে, বিজয় দিবসে, ৭ মার্চে। যে মুজিব ছিলেন তাদের কাছে নিষিদ্ধ নাম, সেই মুজিব আপন আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে। তাদের অন্ধকার দিয়ে, কুয়াশা দিয়ে তাকে ঢেকে রাখতে চেয়েছিলেন, ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন, তাদের সে দূরভিসন্ধি ব্যর্থ হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এখন দেশে-বিদেশে আপন মহিমায় উদ্ভাসিত, বাংলাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক অভিসংবাদিত নেতৃত্ব, সেটাই পরিষ্কার। তারা এই মুজিবের মুজিববর্ষকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধীতার নামে আজকে মুজিববর্ষকে ঘিরে সারাদেশে, এমনকি সারাবিশ্বে যে জাগরণের ঢেউ আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য আমাদের সংগ্রাম সাফল্য উন্নয়ন অর্জন সব কিছুকে ঘিরে নতুন আলোক সম্পাদিত হয়েছে, এটা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। এটা অনেকের গাত্রদাহের কারণ।’

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কারা এই বিরোধীতা করছে? এরাই তারা, যারা ভারতে গিয়ে পানির কথা বলতে ভুলে গিয়েছিল। যারা ভারতে গিয়ে নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট গঙ্গা পানি চুক্তি নিয়ে যখন ঢাকায় প্রশ্ন করা হয়েছিল তখন তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন আমি তো একথা ভুলেই গেছি। আমরা আমাদের স্বার্থের কথা ভুলি না। ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে আমরা আমাদের স্বার্থকে ভুলে যায়নি। আমাদের ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ। ভারত আমাদের দুঃসময়ের বন্ধু ভারত আমাদের উন্নয়নের সহযোগী ভারতের সঙ্গে আমাদের এটা হচ্ছে বন্ধুত্ব। তারা (বিএনপি) ক্ষমতার জন্য দাসত্ব করতেও প্রস্তুত। এটার বড় প্রমাণ নরেন্দ্র মোদি যখন নির্বাচিত হলেন তখন ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসের অফিস খোলার আগেই বিএনপির প্রতিনিধিরা ফুলের মালা আর মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। এখন তাদের লজ্জা করে না নরেন্দ্র মোদির বিরোধীতা করতে?’

বিতর্কিতদের দলে রাখা না রাখা নিয়ে বলেন, ‘আমরা সার্কুলারের মাধ্যমে নির্দেশনা পাঠিয়ে দিয়েছি। সার্কুলারে উল্লেখ করেছি আমাদের সদস্য সংগ্রহ অর্থাৎ যারা পুরানো সদস্য তাদের নবায়ন এবং নতুন সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিতর্কিত ব্যক্তিদের পরিহার করতে বলা হয়েছে স্ট্রিকলি। আমরা বলে দিয়েছি দাগী সন্ত্রাসী, দাগী চাঁদাবাজ, ভূমিদখলকারী, মাদক ব্যবসায়ী মাদকাসক্ত, স্বাধীনতাবিরোধী অশুভশক্তি এরা আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। সাম্প্রদায়িক অশুভশক্তি আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। এই মর্মে সার্কুলার পাঠিয়ে দিয়েছি প্রতিটি সাংগঠিনক জেলায়।’

স্বাধীনতা বিরোধী বা বিতর্কিতদের মধ্যে যারা দলে রয়েছেন তাদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে পুরনো যেসব ব্যক্তিদের নিয়ে বিতর্ক আছে, তাদের বাদ দিয়েই অবিতর্কিতদের নিয়েই আমাদের নতুন সদস্য সংগ্রহ হবে, সদস্য নবায়ন হবে। কাজেই সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠী এরা আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না।’

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সমাজকল্যাণ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ অনেকে।