সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সেনাবাহিনীর এসব কার্যক্রম চোখে পড়ে
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা। রাজধানীর মুগদা বিশ্বরোড এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে সড়কে পুলিশের একটি গাড়ি থেকে মাইকিং করে জানানো হচ্ছে, বিনা কারণে বাইরে কেউ বের হবেন না, বাসায় চলে যান। বাইরে কেউ ভিড় করবেন না, ঘরে অবস্থান করুন। তার পেছনেই দেখতে পাওয়া যায় সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি। সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে যারা বাইরে ছিলেন, তারাও চলে যান বাসায়।
বেলা সাড়ে ১১টা। রাজধানীর দয়াগঞ্জ এলাকা। সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি এসে থামে। সেসময় ওই স্থানে একসঙ্গে চারজন লোক পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাদের মুখে কোনো মাস্ক ছিল না। তাদের থামিয়ে পাশাপাশি না হেঁটে দূরত্ব বজায় রেখে দ্রুত বাসায় যেতে বললে, তারা চলে যান।
বিকেল সাড়ে ৪টা। রাজধানীর কাকরাইল মোড় এলাকা। একটি রিকশায় দুজন যাত্রী যাচ্ছিলেন। রিকশাটিকে থামিয়ে একজনকে নামিয়ে দেয় সেনা সদস্যরা। আরেকজনকে নিয়ে রিকশাওয়ালাকে যেতে বলেন সেনাসদস্যরা।
এমন ঘটনা দিনভর সরেজমিনে দেখতে পাওয়া যায় রাজধানীজুড়ে।
এদিকে সড়কে সেনা সদস্যদের এমন টহল দেওয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। সুত্রাপুরের মুদি দোকানী সাব্বির বলেন, সেনা সদস্যরা মাঠে থাকার কারণে লোকজন বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হবে। কেউ অকারণে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। মানুষ স্বস্তিবোধ করছে। তারা থাকলে ফাকা শহরে অপরাধের ঝুঁকিও কমে যাবে।
ফকিরাপুলের বাসিন্দা মালেক দেওয়ান বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনেকে মানছিল না। তবে সেনা সদস্যরা থাকায় যেকোনো উপায়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলেছে সাধারণ মানুষ। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।
এদিকে আন্তঃবাহিনী পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে রাজধানীসহ সারাদেশের মোট ৬১টি জেলায় বুধবার থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর ২৯০টি দল দেশের ৬১ টি জেলায় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছে। বাইরে কোনো ক্যাম্প স্থাপন না করেই স্থানীয় সেনানিবাস থেকেই এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী।
আন্তঃবাহিনী পরিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে সেনাবাহিনী বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাধারণ জনগণকে উৎসাহিত করছে। পাশাপাশি তারা বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেনটাইনে থাকার বিষয়টিও পর্যবেক্ষণ করছে। বর্তমানে সারাদেশে এই কার্যক্রমে সেনাবাহিনীর আড়াই হাজারের অধিক সদস্য নিয়োজিত