মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি :
মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিউদ্দিন (৭৪)। হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ আজ (বুধবার) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সফিউদ্দিন জ্জর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় হাসপাতালে ভর্তি হন। আজ (বুধবার) ভোর সাড়ে ৪টায় তিনি মারা যান। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা নিশ্চিত হতে সকাল ৭টায় তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য সাভার প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সফিউদ্দিনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার বণ্যা গ্রামে। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি ১১ নম্বর সেক্টরের অধীন সিরাজগঞ্জের চেীহালি উপজেলা কমান্ডার ছিলেন। তিনি ভারতের দেড়াদুন থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সাহসিকতার সাথে গ্রুপ কমান্ডের দায়িত্ব পালন করেন বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জের চেীহালি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের কমান্ডার আফতাব উদ্দিন তালুকদার।
মুক্তিযোদ্ধা সফিউদ্দিনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায় হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে পরিবার-পরিজনসহ মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ঘিওর সদর সদর ইউনিয়নের ঠাকুরকান্দি গ্রামে শ্বশুরবাড়ি বসবাস করে আসছিলেন।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইরনি আক্তার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সফিউদ্দিন আহমেদ একজন তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বিকেল ৫টায় তাঁকে রাস্ট্রীয় মর্যাদায় ঠাকুরকান্দি গ্রামের কবরাস্থানে দাফন করা হবে। করোনা উপসর্গ থাকায় তাঁর জানাজা ও দাফন সরকারী বিধান বা প্রটোকল অনুযায়ী হবে বলে জানান তিনি।
এনিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৯জনে। নিহতদের মধ্যে ৬জন পুরুষ, ২ জন নারী ও ১জন কিশোর। এছাড়া, করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত জেলায় মারা গেছেন ২জন। একজন সিংগাইরে এবং অন্যজন হরিরামপুরে।
এদিকে, মানিকগঞ্জে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্ত ৩ জনই হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১৭৬ জন। আজ (বুধবার) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ।
ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে সিংগাইর উপজেলায় ৪৯জন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪০জন, ঘিওর উপজেলায় ৩২ জন করে, সাটুরিয়া উপজেলায় ২২ জন, হরিরামপর উপজেলার ২১ জন, শিবালয় উপজেলায় ১০জন ও দৌলতপুর উপজেলায় রয়েছেন ২জন।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত মোট দুই হাজার ৭৭৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ২৭৫টির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। যাতে পজিটিভ পাওয়া গেছে ১৭৬জনের দেহে। আক্রান্তদের মধ্যে ২০জন জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ১১৪জন নিজ বাড়িতে আসোলেশনে আছেন। অন্যরা সুস্থ হয়েছেন ৪২জন।