খালেদা জিয়া মুক্ত

1037

মিরর বাংলাদেশ: মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর পিজন সেল থেকে খালেদা জিয়াকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে আজ দুপুরে খালেদা জিয়ার মুক্তির আদেশ পৌঁছায় আইজি পিজন্সের কাছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দুই শর্তে তাকে মুক্তি দেয়া হলো। শর্ত অনুযায়ী তিনি এই সময়ে বিদেশ যেতে পারবেন না। নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে।

জানা যায় ২ বছর ১ মাস ১৬ দিন পর কারামুক্ত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সব আইনী প্রক্রিয়া শেষে বুধবার  বিকেলে ৩টা ৪৮  মিনিটে   মুক্তি পান তিনি।মুক্তি পাওয়ার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় গুলশানের ফিরোজাতে।    মঙ্গলবার রাতে ফিরোজার ধোঁয়ামোছার    কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৮     সালের     ৮ ফেব্রুয়ারী ফিরোজা থেকেই    নাজিমুদ্দিন রোডের  কারাগারে নেয়া হয় তাকে।

দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বাসায় নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে  যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার পরিবারের সদস্যরা।

বেলা পৌঁনে তিনটার দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে তারা আসেন। এ সময় খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি গাড়িও প্রবেশ করে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাসপাতালে প্রবেশ করলে নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তিনি কিছুটা বিরক্ত বোধ করেন। পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভাই শামীম ইস্কান্দার এবং বোন বেগম সেলিনা ইসলাম হাসপাতালে পৌঁছেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুত্র জানায়,   বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা  জিয়ার সাজা স্থগিত করে  শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করে সরকার।

খালেদা জিয়ার মুক্তির সুপারিশের ফাইলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।   পরে তা আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসে। সেখান থেকে কারাগারে আইজি প্রিজন বরাবর পাঠানোর পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে হাসপাতাল থেকে মুক্ত হন খালেদা জিয়া।

এর আগে দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল      জানান, সকল আইনী প্রক্রিয়া শেষ। কিছুক্ষণের মধ্যে কারামুক্ত হবেন খালেদা জিয়া।      

মঙ্গলবার  আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে খালেদা জিয়া ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। সরকার মানবিক কারণে সদয় হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা (উপধারা-১) অনুযায়ী তার মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রয়ারি থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া। সেখানে তার সঙ্গে রয়েছেন গৃহকর্মী ফাতেমা। এরমধ্যে তাকে (খালেদা জিয়া) দুবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল। প্রথমবার কয়েক ঘণ্টা হাসপাতালে কাটানোর পর তাকে ফের কারাগারে নেওয়া হয়। তবে দ্বিতীয় দফায় বেশ কিছু দিন ধরে বিএসএমএমইউ-তে আছেন তিনি।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রথমে পাঁচ বছরের এবং পরবর্তী সময়ে তা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার। এই দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।