মিরর বাংলাদেশ : ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল জিটিভির সিটি এডিটর রাজু আহমেদ’র বাবা মজনু বেপারির (৭৫) ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৭ মে বৃহস্পতিবার। ২০১৫ সালের ০৬ মে দিবাগত রাত ১২টায় রাজধানীর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলে, ৩ মেয়েসহ অসংখ্যা গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ০৭ মে বাদ জোহর মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কাজীরগাঁও নিজ গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয় ।
মিরর বাংলাদেশ পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুম মজনু বেপারির বিদেহী আত্মার শান্তি ও আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসীব করেন এ কামনা করা হয়।
বাবার মৃত্যুবার্ষিকীর দিন বাবাকে নিয়ে রাজু আহমেদ আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন ফেসবুকে।
নিচে সিনিয়র সাংবাদিক রাজু আহমেদ’র স্ট্যাটাস তুলে ধরা হলো
” আমার আব্বা একজন অতি সাধারণ মানুষ ছিলেন। কিন্তু উনার কাছ থেকে জীবন গঠনের যে শিক্ষা পেয়েছি- তার তুলনা হয় না। আব্বার জন্ম হয়েছিল মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার খেতেরপাড়া গ্রামে। শুনেছি, উনার বাবা মফিজউদ্দীন বেপারী (আমার দাদা আমার জন্মের অনেক বছর আগেই মারা যান, দাদী মারা গিয়েছিলেন তারও অনেক আগে) আমাদের এলাকার বিশাল ধন্যাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। নোয়াখালীর চৌমুহনীতে ছিল দাদার পাটের ব্যবসা। এলাকায় জমি-জমা প্রচুর ছিল। মুরব্বিদের কাছে শুনেছি, আমাদের বাড়ির দক্ষিণ দিকে তাকালে সামনে যত জমি দেখা যায়, সব ছিল আমার দাদার। উত্তর দিকেও প্রচুর জমির মালিক ছিলেন উনি। কিন্তু এক সময় এসবের কিছুই আর অবশিষ্ট ছিল না। কোনো এক ঝামেলায় পাটের ব্যবসায় লোকসানে পড়েছিলেন দাদা। বিশাল সম্পদের এই মালিকেরা নাকি সামান্য একটুখানি জমি নিয়ে দুই ভাই একে অপরের বিরুদ্ধে মামলায় জড়িয়ে গিয়েছিলেন। আর সেই মামলা ফেরে পরে একে একে সব জমিজমা হাতছাড়া হয়ে যায়। এভাবে বিশাল ধনী থেকে মফিজউদ্দীন বেপারী সাধারণ পর্যায়ে নেমে আসেন।
এই মফিজউদ্দীন বেপারী সাহেবের একমাত্র ছেলে আমার আব্বা। ছোটবেলায় শান-শওকতের মধ্যে ছিলেন। কিন্তু বড় হয়ে আর সেই অবস্থা পেলেন না। ফলে ধনীর দুলাল হয়ে জীবন পার করার সুযোগ তাঁর হয়নি। আমাদের চার ভাই, তিন বোনকে বড় করতে গিয়ে কঠিন সংগ্রাম করেই আব্বাকে জীবনের অধিকাংশ সময় পার করতে হয়েছে। এই সংগ্রামে আব্বার মূল সহযোগী আমার মা। পরবর্তীতে আমার বড় দুই ভাই সংসারের কঠিন দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে আব্বার কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করেছেন।
কিন্তু আমি সেই সুযোগ খুব একটা পেলাম না। জীবন সংগ্রামে শক্তভাবে দাঁড়ানোর আগেই ২০১৫ সালের ৭ মে হঠাৎ চলে গেলেন আব্বা- যেখানে মানুষ একবার গেলে আর ফিরে আসে না।
আব্বা চলে গেলেও আমার কাছে রয়ে গেছে তাঁর অমূল্য শিক্ষা। যার একটি হলো-‘কখনো মানুষের ক্ষতির চিন্তা করবি না’’।
……………………………………………
আজ ৭ মে আমার আব্বার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী।
…………………………………………………………………………………….
আপনার জন্যই এই জীবন পেয়েছি। বড় হয়ে উঠেছি আপনার স্নেহ-মমতা-শ্রমে। কিন্তু আপনার জন্য কিছুই করতে পারিনি…