রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর শাখাটিও সিলগালা

560

মিরর বাংলাদেশ :   করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া ফলাফলসহ বিভিন্ন অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর শাখাটিও সিলগালা করে দিয়েছে র‌্যাব। বুধবার বিকালে অভিযান চালিয়ে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত হাসপাতালের শাখাটি সিলগালা করে দেয়। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার একই অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখায় অভিযান চালিয়ে শাখাটি সিলগালা করে দেয় র‌্যাব।

বুধবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে মিরপুর ১২ নম্বরে অবস্থিত রিজেন্ট হাসপাতালটি র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে একটি দল সিলগালা করে দেয়।

সারওয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, রিজেন্টের মিরপুর শাখার হাসপাতালটি করোনা রোগীর চিকিৎসায় নানা প্রতারণা করেছে। তারা রোগীদের স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা না করে ফেলে দিত অথচ প্রতিটি পরীক্ষার জন্য ৩৫০০ টাকা নেয়া হতো। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে মিরপুরের এই হাসপাতালে আমি অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে সতর্ক করে দিয়েছিলাম।

হাসপাতালটিতে করোনা রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখানে ২২ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে গতকালই রোগীদের অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়। রোগীরা হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়ার আগেই সেখান থেকে চলে যান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মঙ্গলবার ওই হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা বন্ধের নির্দেশ দেয়। এরপর সন্ধ্যায় উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কে রিজেন্ট হাসপাতালের শাখাটি ‘সিলগালা’করে দেয় র‌্যাব। পরে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের ১৪ নম্বর সড়কে রিজেন্টের প্রধান কার্যালয়ও বন্ধ করা হয়।

এর আগে সোমবার বিকালে রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় হাসপাতালটির ব্যবস্থাপকসহ আটজনকে আটক করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযানে র‌্যাব করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার প্রমাণ পায়। এছাড়া হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ ছয় বছর আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে র‌্যাব। কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হওয়ায় রোগীদের কাছ থেকে টাকা না নেয়ার কথা থাকলেও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে করোনা টেস্ট ও ভর্তি রোগীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই করোনার ফলাফল দেওয়াসহ নানা অভিযোগে গ্রেপ্তার বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতালের সাতজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

বুধবার রাজধানীর উত্তরা থানা-পুলিশ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তাদের সাতদিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

আসামিদের মধ্যে একজন কিশোর হওয়ায় তার বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হয়নি। সবাইকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন- হাসপাতালটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব, হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব হাসান, হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক রাকিবুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বনিক, রিজেন্ট গ্রুপের গাড়িচালক আবদুস সালাম ও নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রশীদ খান।

এর আগে উত্তরা পশ্চিম থানায় এ ঘটনায় মামলা করে র‌্যাব। করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট দেওয়াসহ নানা প্রতারণার অভিযোগে এনে করা এই মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিমকে প্রধান আসামি করা হয়।