সরকার কারও গলা টিপে ধরেনি: প্রধানমন্ত্রী

117
১৪ দলের বৈঠকে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী

* ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক

মিরর বাংলাদেশ  : স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, তা গেলো ১৫ বছরে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি বলেছেন, এরপরও শুনতে হয় কথা বলার স্বাধীনতা নেই। কিন্তু সরকার কারো গলা টিপে ধরেনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে )সন্ধ্যায় গণভবনে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন সরকার প্রধান।
প্রধান মন্ত্রী বলেন, ‘বিজয় ও স্বাধীনতার চেতনা নস্যাৎ করতেই ২৫ আগস্টের ঘটনা ঘটানো হয় । তারপর থেকেই দেশটা শুধু পেছাতে থাকে। সরকার জনগণের জন্য কাজ করে, কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মানুষ এটা বুঝতে পারে ।
গ্যাস বিক্রির চুক্তিতে রাজি হননি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শক্তিশালী (যুক্তরাষ্ট্র) দেশটি সেই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি । গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় বসার মত দৈনতায় ছিলাম না কখনও ।
‘বাংলাদেশে এয়ার বেজ বানাতে দিলে, কারও কারও নির্বাচনে জিততে কোনো সমস্যা নেই। এমন প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু রাজি হইনি আমি । বে-অব বেঙ্গলে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ঘাঁটি বানাবে । ভারত মহাসগাগরের এই শান্তিপূর্ণ জায়গাটার ওপর তাদের নজর । এখানে বেজ বানিয়ে তারা কোথায় হামলা করতে চায়? আমি এটা করতে দিচ্ছি না বলেই খারাপ,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, চক্রান্ত এখনো চলমান রয়েছে। তবে জনগণ সঙ্গে রযেছে, তারাই সামনে চলার মূল শক্তি বলে গর্ব করেন সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুদ্রাস্ফীতি সব দেশের মত বাংলাদেশেও হচ্ছে । একই কথা রিজার্ভেও । রিজার্ভ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কেন না, আপদকালীন খাদ্য মজুত রয়েছে। এতবেশি আলোচনার কারণে আজ প্রায় সবাই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন । এই সতর্কতা দেশের জন্য ভালো ।
সমবায়ের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ধান-মাছ চাষ হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, সেখানে ছয়বিঘা জমি দিয়েছি আমি । সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে এখন শরীয়তপুরের সবজি । ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্ত অতিক্রম করেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা ।
সবসময় সাধারণ-নির্যাতিতদের পাশে আছেন বলেও জানান সরকার প্রধান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা কবে ফেরত যাবে জানি না। প্রতিদিন সেখানে নতুন-নতুন শিশু জন্মাচ্ছে । অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে । মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ-সংঘাত করতে যাইনি আমরা। আলোচনা চালানো হচ্ছে। তবে মিয়ানমারের নিজেদেরই অবস্থা ভালো না ।
উৎপাদনে কোনো সংকট নেই দেশে, তবে ইনফ্লেশন কমানোটা চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের করণীয় ঠিক করতে আলোচনা হবে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে।
২০০৯ সালে এক তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর জোট মহাজোট ক্ষমতায় আসে। এ সময় ১৪ দলের শরিক দলগুলোর কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায়ও স্থান পান। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও এ ধারা অব্যাহত ছিল। টানা দুই মেয়াদে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
তবে ২০১৮ ও ২০২৩ সালের নির্বাচনের পর গঠিত আওয়ামী সরকারের মন্ত্রিসভায় ১৪ দলের কোনো নেতাকে আর দেখা যায়নি।
১৪টি দলের সমন্বয়ে রাজনৈতিক এ জোট গঠিত হলেও বর্তমানে দল আছে ১২টি। আওয়ামী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, জাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ, গণ আজাদী লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(বাসদ), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বিটিএফ), জাতীয় পার্টি(মঞ্জু) গুলোর মাঝে কয়েকটি দল বাদে বাকি দলগুলোর অস্তিত্ব মূলত প্যাডসর্বস্ব।