ছবি : স্ত্রীর সাথে সাংবাদিক নান্নুর এছবিটি এখন স্মৃতি ( মোয়াজ্জেম হোসেন নান্নুর ফেসবুক থেকে নেয়া)
মিরর বাংলাদেশ :
অগ্নিদগ্ধ হয়ে একমাত্র ছেলে পিয়াসের পর দৈনিক যুগান্তরের অপরাধ বিভাগের প্রধান মোয়াজ্জেম হোসেন নান্নুর মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে স্ত্রী-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। ঘটনার রাতে ওই বাসায় সাংবাদিক নান্নু ছাড়াও ছিলেন স্ত্রী পল্লবী ও শাশুড়ি। এ বিষয়ে গুলশান বিভাগ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। জানা গেছে, রাজধানীর আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সাংবাদিক মোয়াজ্জেম হোসেন নান্নুর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের তিনটি সংস্থা ১৭ জুন ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ ও আলামত (ক্রাইম সিন) সংগ্রহ করে। আগুনের সূত্রপাতে গ্যাসের লাইনের কোনো দায় ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
পুলিশের তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাংবাদিক নান্নু দগ্ধ অবস্থায় ভবনের ছাদে যান, পাইপ নিয়ে আবার বাসায় আসেন। এরপর নিচে নামেন। কিছুক্ষণ পর প্রতিবেশী ফ্ল্যাট মালিকের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। এসব ঘটনার মধ্যে সাংবাদিক নান্নুর স্ত্রী কিংবা শাশুড়িকে দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, নান্নুকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নেয়ার কমপক্ষে ২৫ মিনিট পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজে নান্নুর স্ত্রীকে দেখা যায়। স্বামী অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় স্ত্রীর ভূমিকা কী ছিল, ওই রাতে আসলে আর কী কী ঘটেছিল তা জানতে সাংবাদিক নান্নুর স্ত্রী ও শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ ব্যাপারে পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রধান ও ডিএমপির গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ফ্ল্যাটটি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। তদন্তের স্বার্থে ফায়ার সার্ভিস, তিতাস ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট পরিদর্শন করছেন।
তিনি বলেন, সাংবাদিক নান্নুর স্ত্রী-শাশুড়ি গ্রামের বাড়ি আছেন। নান্নুর মৃত্যু রহস্য কী, ওই রাতে ফ্ল্যাটে ঠিক কী ঘটেছিল, অন্য কোনো ঘটনার অবতারণা হয়েছিল কিনা তা জানতে চাওয়া হবে।
মোবাইলে স্ত্রী শাহীনা হোসেন পল্লবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানান, তিনি যশোরে রয়েছেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিনি।
তিনি বলেন, আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। শর্ট সার্কিট কিংবা গ্যাসের লিকেজ যে কারণেই আগুন লাগুক না কেন তা তদন্ত হোক। পুলিশকে সব ধরনের সহযোগিতা করবো।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে আমি সন্তানের পর স্বামীকেও হারালাম। বাবাও বেঁচে নেই। আমার তো বাঁচার অবলম্বন বলতে আর কিচ্ছু নেই। একটাই অনুরোধ আপনারা সাংবাদিক ভাই-বোনরা আমার পাশে থাকবেন। যেমন করে নান্নুর পাশে ছিলেন।