নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী জনসভা
মিরর বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপি ২০ দলীয়ভাবে ও আমরা মহাজোট হয়ে নির্বাচন করি। আমরা ২৩৩ সিটে জয় লাভ করেছিলাম। বিএনপি পায় শুধু ৩০ টি সিট। বাকিগুলো জোটের মিত্ররা পেয়েছিল। এ নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা নির্বাচন ঠেকাতে আগুন সন্ত্রাস শুরু করে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের মাসদাইরে একেএম শামসুজ্জোহা ষ্টেডিয়ামে এক নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী । জনসভায় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সংসদ ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের র্ব্তমান সংসদ সদস্য ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমান, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল সহ জেলা-মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নারায়ণগঞ্জ ইতিহাসের সাক্ষী। বঙ্গবন্ধু ৬ দফার জন্য নারায়ণগঞ্জে মিটিং করেছিলেন, তা হয়েছিল আদমজীতে। ঐদিন রাতেই তাকে আটক করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা কারাগারে। ১৯৬৮ সালে ১৮ জুন ঢাকা কারাগার থেকে ক্যান্টোনমেন্ট নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা আগরতোলা মামলা দেয়া হয়। কিন্তু বাঙালিরা সংগ্রমা শুরু করে। ৬ জুন হরতাল ডাকা হয়। এই নারায়ণগঞ্জ থেকে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় সংগ্রামে যুক্ত হয়েছিল। বিভিন্ন আন্দোলনে, বিভিন্ন সভায় নারায়ণগঞ্জই অগ্রনী ভূমিকা রেখেছে। ‘
প্রধানমন্ত্রী বলেন,২০১৪ এর নির্বাচন যাতে না হয় সে লক্ষ্যে ২০১৩ থেকেই তারা অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছে। মানুষকে পুড়িয়ে ফেলেছে। মানুষকে হত্যা করেছ, সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। এই জ্বালাও পোড়াও, মানুষ খুন করাই হলো বিএনপির একমাত্র গুণ। তিনি বলেন, আমরা দেশের দারিদ্র্যের হার কমিয়েছি। শিক্ষার হার বাড়িয়েছি। বিএনপির আমলে শিক্ষার হার কমেছে আর দারিদ্র্যের হার বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা যখন দেশের দায়িত্ব দেন তখন এক টাকাও রিজার্ভ ছিল না। মানুষের ধানের গোলাও ছিল না। পাকিস্তানি আর্মি সব পুড়িয়ে দেয়। শূন্য হাতে বঙ্গবন্ধু দেশের দায়িত্ব নিয়ে দেশকে স্বয়ংসম্পন্ন করেন। প্রতিটি ঘরে ঘরে তিনি রিলিফ পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি মাত্র তিন বছর সাত মাস দেশ শাসনের সুযোগ পান। এসময় তিনি দেশকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা আমার মা-বাবা, ভাই ও চাচাকেসহ ১৮ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমি ও আমার ছোট বোন শেখ রেহানা বিদেশ থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। কিন্তু এ বেঁচে থাকাটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্বিসহ হয়ে ওঠে।
শেখ হাসিনা আগামী সংসদ নির্বাচনে সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ৭জানুয়ারি ‘সবাই ভোট কেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান। ২০০৯ থেকে ২০২৩ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আজকে আমরা ২০২৪-এ পা দিয়েছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই বাংলাদেশে এত উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই নির্বাচনকে ঘিরে অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। নির্বাচন যাতে না হয়, সেই চক্রান্ত এখনও চলছে। যেহেতু নিজেরা নির্বাচন করে জিততে পারবে না, তারা দেশের মানুষকে বঞ্চিত করতে চায় ভোটের অধিকার থেকে। মিলিটারি ডিকটেটররা যখন একে একে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন আবার তারা সেই একই কাজ করতে চায়। আমরা বলেছি নির্বাচন হবে।’
ভোটের অধিকার রক্ষায় সরকারের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ৭ তারিখে নির্বাচন। আমি দেশের সবাইকে অনুরোধ করবো, সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবেন। ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোটের অধিকার আপনাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার মিলিটারি ডিকটেটররা কেড়ে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করেছিল। এই আমরা আওয়ামী লীগ সেখান থেকে জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি, প্রতি রাতে কার্ফিউ অবস্থা– সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ‘আজকে বাংলাদেশের মানুষ তার ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। এই ভোটের অধিকার আপনার মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার আমরা সংরক্ষিত করেছি।