মিরর বাংলাদেশ : ২০ দিন পর ফের জনসমক্ষে এলেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের বৈঠকে যোগ দিতে হাজির হয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ শাসক। জানা গিয়েছে, সে দিনের বৈঠকে মিলিটারির উচ্চপদস্থ কর্তাদের সাথে দেশের পরমাণু যুদ্ধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নতুন নীতি প্রণয়ন সংক্রান্ত একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন কিম।
তবে এই জরুরি মিটিং কবে হয়েছে, সে সংক্রান্ত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। যদিও কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক যুদ্ধ বিরোধকে আরো বাড়িয়ে তোলার এবং সশস্ত্র বাহিনীকে কৌশলগত উপায়ে একটি উচ্চ সতর্কতামূলক অপারেশনে শামিল করার জন্য নতুন নীতিমালা উত্থাপন করা হয়েছে।’ মিলিটারি কর্তাদের সাথে ওই বৈঠকের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন নথি পরীক্ষা করে মিলিটারি কর্তাদের বেশ কিছু নির্দেশ দিচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক।
কিম জং উন উত্তর কোরিয়ার মিলিটারি কমিশনেরও প্রধান। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি’র রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সে দিনের বৈঠকে বেশ কিছু সেনাপ্রধানের পদের রদবদল করেন কিম। এত দিন মিলিটারি চিফ ছিলেন পাক জোং চোন। তাকে সেই জায়গা থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় ভাইস মার্শালের পদে। এ ছাড়াও রি পিয়ং চোল-কে অস্ত্রশস্ত্র সংক্রান্ত অগ্রগতির দিক খতিয়ে দেখার জন্য সিনিয়ার পার্টি অফিসিয়াল ইনচার্জ করা হয়েছে।
তার শারীরিক অসুস্থতার খবরে বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল। এমনকী কিম মারা গিয়েছেন দাবি করে একটি ছবিও প্রকাশ করে দেয়া হয়েছিল হংকং টিভি-র তরফে। আর সেই সব গুঞ্জনের মাঝেই দেশের একটি সার কারখানার উদ্বোধনে গিয়ে সারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ায় দোর্দণ্ডপ্রতাপ শাসক কিম জং উন।
২০ দিন আগেই সেই সার কারখানার উদ্বোধনে দেখা গিয়েছিল কিম জং উন-কে। কিন্তু তারপর আবার একবার তার মৃত্যুর খবর নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায় সারা বিশ্বে। আন্তর্জাতিক একটি সংবাদ মাধ্যমের সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, পিয়ংইয়ংয়ে কোনো বড় ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে। যা কিমের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়েও হতে পারে বলে দাবি।
কিন্তু কোন ভিত্তিতে এমনতর রিপোর্ট?
সেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছিল, সম্প্রতি পিয়ংইয়ং শহরের মেইন স্কোয়ার থেকে সরানো হয়েছে কিম জং উনের ঠাকুরদা কিম জং-ইল এবং বাবা কিম ইল সাং-এর ছবি সরানো হয়েছে। ব্রিটেনের এক সংবাদমাধ্যমকে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক রয় ক্যালি জানিয়ে ছিলেন, ‘শেষবার এমনটা হয়েছিল, যখন উত্তর কোরিয়ার কোনো শীর্ষ নেতার মৃত্যু হয়।’ আর তারপরই কিমের মৃত্যুর জল্পনা আরো জোরদার হয়।
তবে সিওলের এওহা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইজলে কিমের এই জনসমক্ষে আসার অন্য অভিসন্ধি খুঁজে পেয়েছেন। তার কথায়, ‘কিমের এই জনসমক্ষে আসার পিছনে যতটা না আন্তর্জাতিক সংকেত রয়েছে, তার থেকেও বেশি দেশীয় রাজনীতির প্রভাব রয়েছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল, যতবারই আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো কিমের মৃত্যুর জল্পনা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করছে, তত বারই সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে প্রকাশ্যে আসছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট।