ছবি : তিন সহপাঠি মাশুকুর- সুমন – সোহেল
মিরর বাংলাদেশ : ১৯৯০ সাল থেকে ২০২০ । এরই মধ্যে কেটে গেলো প্রায় ৩০ বছর। বন্ধুদের আড্ডায় প্রায় আসতো মাশুকুরের নাম। কিন্ত দীর্ঘ ৩০ বছর তার কোনো খোজ পায়নি সহপাঠিরা। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার তল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই ক্লাসে মাশুকুরের সাথে পড়াশুনা করতো নুর আহমেদ ভুইয়া সোহেল, আদিল,রমিজ, আনোয়ার, জাকির,লিটন, সুমনসহ আরো অনেকে। ১৯৯০ সালে প্রাইমারির পাঠ চুকিয়ে মাশুকুর বন্ধুদের ছেয়ে চলে যায় । তারপর থেকে তার আর কোন খোঁজ পায়নি বন্ধুরা। এরই মধ্যে মাশুকুর ৯৭ সালের দিকে পড়াশুনার জন্য দক্ষিন কোরয়া যাওয়ার খবর পায় তার বন্ধুরা।
দীর্ঘ ৩০ বছর পর হারিয়ৈ যাওয়া মাশুকুরের খোঁজ পেয়েছে তার বন্ধুরা। গত ১০ রমজানে তাকে আবিস্কার করা হয় নারায়ণগঞ্জ শহরের সায়াম প্লাজার আলফা ব্রডওয়ে সিস্টেম অফিসে। ঐ অফিসের জিএম মাশুকুর। তবে তার নাম আর মাশুকুর নেই তিনি এখন মাহফুজুর রহমান শাওন। মাহফুজুর রহমান শাওনের নাম যে মাশুকুর ছিল তা তার পরিবারের অনেক সদস্যই জানেনা।
৩০ বছর পর নুর আহমেদ ভুইয়া সোহেলকে বন্ধু মাশুকুরের সন্ধান দিয়েছে তাদের আরেক বন্ধু সুমন। তল্রা এলাকার বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ ডেসার সাবেক সিবিএ নেতা সামসুল আলম ভুইয়ার পুত্র নুর আহমদ ভুইয়া সোহেল।
ছবি : তিন বন্ধু সুুুমন কোরেশী,সোহেল, মাশুকুর (ঈদের দিন তোলা)
যেভাবে সন্ধান মেলে মাশুকুরের :
যাকে ঘিরে বাল্যকালের অনেক স্মৃতি আর আবেগ জড়িয়ে আছে সেই বন্ধু মাশুকুরের ৩০ বছর পর সন্ধান পাওয়া নিয়ে নুর আহমেদ ভুইয়া সোহেল জানান.দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তাকে অনেক খুঁজেছি। ফেসবুকে তার নাম লিখে বহুবার চেষ্টা করেছি। কিন্ত তাকে পাইনি। হঠাৎ করে বন্ধু সুমন বললো চল তাদের বাসায় যাই। কথা অনুযায়ী পশ্চিম তল্লা মাশুকুরদের বাসায় গেলাম। মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেনের পুত্র মাশকুর। বাসায় যাওয়ার পর মাশুকুরের ছোট ভাই রায়হানকে জিজ্ঞেসা করলাম তোমার ভাই মাশুকুর কি বাসায় আছে সে বললো আমার ভাইয়ের নাম মাহফুজুর রহমান। হতাশ হয়ে ফিরলাম। নাম পরিবর্তনের কারনে মাশুকুরকে চিনতে সমস্যা হচ্ছে অনেকের। কিন্তু বাল্যবন্ধু মাশুকুরের নাম আমাদের অন্তরে গাথা ছিল। তবে জানতে পারলাম চাষাড়া সায়াম প্লাজায় রায়হানের ভাই মাহফুজুর রহমানের অফিস।
সোহলে আরো জানান, বন্ধু সুমনের কথা মতো দুই জনই চলে যাই সায়াম প্লাজার ঐ অফিসে। প্রথম দেখাতে তাকে চিনতে সমস্যা হচ্ছিল। কারন ৩০ বছরের সেই বাল্য বন্ধু এখন আমাদের মতো অনেক বড়। আমি তাকে দেখেই জিজ্ঞাসা করলাম তোমার নাম কি মাশুকুর ? উত্তর আসলো ,আপনি কিভাবে জানেন আমার নাম মাশুকুর। এ নাম তো ৩০ বছর আগে আমি পরিবর্তন করে মাহফুজুর রহমান শাওন রেখেছি।
সোহেল জানান. এর পরবর্তী দৃশ্য অনেক আবেগের। মাশুকুর যখন জানতে পারলো আমরা তার বাল্য বন্ধু, তখনই স্মৃতিপটে ভেসে এলো ৩০বছর আগের পুরোনো অনেক স্মৃতি।মাশুকুরে সাথে আলিঙ্গন হলো । তবে মনের কোনে ভেসে এলো বন্ধুত্বের জয়গান।
সবশেষে এবার ঈদের দিন একসাথে কাটালো বন্ধু সোহলে , সুমন আর মাশুকুর। বন্ধুত্বের ভালোবাসায় বেঁচে থাকুক সম্প্রীতি আর সৌহাদ্যের অটুট বন্ধন।