অনেক আইন থাকা সত্তে ও দেশে রক্ষা হচ্ছে না পরিবেশ

661

মিরর বাংলাদেশ :পরিবেশ সংক্রান্ত্র বহুসংখ্যক আইন থাকা সত্তে¡ও দেশে পরিবেশ রক্ষিত হচ্ছে না। তবে রাজনীতিবিদদের সহযোগে জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সরকারী সংস্থার দুর্নীতি পরিবেশ বিষয়ক নীতি ও আইন বাস্তবায়নের পথে অন্যতম বাঁধা। এই বাঁধা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক জটিলতা দূর করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় এ সমস্ত আইনের বাস্তবায়নের প্রতি নজর দিতে হবে।
বাপা-বেন এর যৌথ উদ্যোগে গতকাল শনিবার সকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব বক্তব্য উঠে আসে। এতে মুল বক্তব্য রাখেন বাপা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির ও সদস্য সচিব ও নির্বাহী সহ-সভাপতি ডা. মো. আব্দুল মতিন। বাপা), বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) এর যৌথ উদ্যোগে এবং দেশের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও পরিবেশ সপক্ষ ৫২টি সংগঠণের সহযোগিতায় ‘‘বাংলাদেশে পরিবেশ আন্দোলনের রাজনৈতিক কার্যকারিতা: চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকার” বিষয়ক এক বিশেষ সম্মেলন এবছরের জানুয়ারিতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঔ সম্মেলনের “চূড়ান্ত প্রস্তাবনা প্রকাশ” উপলক্ষে এ ওয়েববিনারের আয়েজন করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাপা’র সহ-সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহŸায়ক অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক। সম্মেলনের চূড়ান্ত প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন বেন ও বাপা’র প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপক এম এম আকাশ, বাপা’র সম্মেলনের কারিগরি অধিবেশন কমিটির আহŸায়ক অধ্যাপক ড. এম শহীদুল ইসলাম, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাপা’র নগরায়ন ও নগরসুশাসন বিষয়ক কমিটির আহŸায়ক স্থপতি সালমা এ শাফি।
বাপা’র প্রস্তাবনায় আরো বলা হয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সামাজিক ও মানবিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, এবং সে লক্ষ্যে দেশের সকল নাগরিককেই উদ্যোগী হতে হবে। এতে আরো বলা হয়, যেকোনো বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের আগে একটি সমন্বিত, নির্মোহ,স্বচ্ছ, এবং অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ অভিঘাত মূল্যায়ন নিশ্চিতের পরামর্শ দেয়া হয়। এতে আরো বলা হয় পরিবেশ রক্ষার জ্ন্য, বিশেষত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন দেশী এবং বিদেশী তহবিলের বণ্টন এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করে এগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণে রাজনৈতিক সদিচ্ছা বৃদ্ধি করতে হবে। রাজনৈতিক দলসমূহ যাতে পরিবেশ বিষয়ক প্রদত্ত তাদের প্রতিশ্রæতিসমূহ রক্ষা করে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এব্যাপারে অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের বন, নদী-জলাশয়সহ সার্বিক পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মের হাতেই তুলে দিতে হবে। এআন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। কারণ ভবিষ্যত প্রজন্মেও স্বার্থেই দেশের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। জাতীর স্বার্থে তরুন প্রজœমসহ ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। তাদের হাতেই এখন থেকে পরিবেশ রক্ষায় দায়িত্ব তুলে দিতে হবে।
অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক বলেন, পরিবেশ বিনষ্টকারীদের সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন না দেয়ার পরামর্শ দেন। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, দুনীর্তিবাজ,মুনাফালোভীদের দিয়ে দেশের পরিবেশ রক্ষা হবে না।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলিকে পরিবেশবাদিদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পারলে দেশ উপকৃত হবে। নদী, বন,পরিবেশ রক্ষায় দায়িত্বশীল ভুমিকা রাখতে রাজনৈতিক দলুগলিকে চাপ সৃষ্টি করতে বাপা-বেনের মতো এধরণের সংগঠনের ভুমিকা রাখতে হবে।
বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন পরিবেশ রক্ষায় পরিবেশবাদি সংগঠনকে বলিষ্ট ভুমিকা রাখার দাবি জানান। তিনি তার দলের পক্ষ এব্যাপারে সব সময়ে সহায়তার আশ্বাস দেন।
আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও বাপা’র পরিবেশ বিষয়ক কমিটির আহŸায়ক সঞ্জীব দ্রং নদী বলেন, পাহাড়ী বন ও নদী রক্ষায় আদিবাসীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। আদিবাসী মানুষকে বন নদী রক্ষা দায়িত্ব না দিলে পরিবেশ রক্ষা হবে না। এর পাশাপাশি নদী,বন পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক ও মুনাফা করা দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।