মিরর বাংলাদেশ :
অফিস পিয়নের রহস্যজনক এক ভিডিওতে ফেঁসে যাচ্ছেন রেলওয়ের নিরপরাধ এক কর্মকর্তা। পিয়নের টাকা গনণার ভিডিওর সঙ্গে এডিটিংয়ের মাধ্যমে কথোপকথন যুক্ত করে ফেসবুকে ছড়ানো ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ওই কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যে বদলির আদেশ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যা নিয়ে রেলে রীতিমতো তোলপাড় চলছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট কিছু ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপে পরিকল্পিতভাবে একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক অফিসের পিয়ন নাসির উদ্দিন কিছু টাকা গণনা করছেন। এ সময় কয়েকজন লোক তার সঙ্গে কথা বলছেন এবং বিভিন্ন ধরনের আলাপে ব্যস্ত রয়েছেন। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গোঁপনে এ ভিডিও ধারণ করা হয়। তবে ভিডিওর কথা বার্তা তেমন স্পষ্ট নয়। এর সঙ্গে রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মহিউদ্দিন আরিফকেও যুক্ত করে দেওয়া হয়। সেখানে মহিউদ্দিন আরিফকে একজন ঠিকাদার তার কাজের জন্য বারবার অনুরোধ করছেন। একপর্যায়ে ডিআরএম ওই ঠিকাদারকে বলছেন, ‘ঠিক আছে আপনার টেন্ডারের আইডি পিয়ন/ স্টাফের কাছে দিয়ে যান।’ তার এই বক্তব্যকে পিয়নের টাকা গণনার ওই ভিডিওর সঙ্গে যুক্ত করে দিয়ে প্রকাশ্যে ‘ঘুষ লেনদেন’ বলে সুপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় ওই পিয়ন নাসিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই ঘটনায় সম্পৃক্ততার অজুহাত দেখিয়ে মহিউদ্দিন আরিফকে ডিআরএম থেকে বদলি করে রেল ভবনে পদায়ন করা হয়। যা নিয়ে রেলে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। শুধু তাই নয়, এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যা নিয়ে রেলওয়ে কর্মকর্তারা বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মহিউদ্দিন আরিফ ৫ আগস্টের গণ অভ্যূত্থানের পর রেলের ডিআরএম পদে আসীন হন। এরপর রেলের নানা অনিয়ম রোধে নিরলসভাবে বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ হয় রেলের ভেতরে থাকা ফ্যাসিস্ট আমলের সুবিধাভোগী ও দুর্ণীতিবাজ সিন্ডিকেট। তারাই পরিকল্পিতভাবে এই ভূয়া ভিডিও বানিয়ে আরিফের মানহানির চেষ্টা করেছে। তাকে বদলির মাধ্যমে সফলও হয়েছে এই সিন্ডিকেট। ফলে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আমরা মনে করি।
ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে অফিস সহকারি নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আমার সিটে বসে ধারের টাকা গুনছিলাম। এটা কৌশলে কে বা কারা গোপনে ভিডিও ধারণ করে ডিআরএম স্যারের ছবির সঙ্গে যুক্ত করে ছেড়ে দিয়েছে। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমাকে ডিআরএম অফিস থেকে সরানোর জন্য এটি করা হয়েছে। আমি এর সুবিচার চাই।’
রেলওয়ের ডিআরএম মহিউদ্দিন আরিফ বলেন, ‘অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এডিটিংয়ের মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আশা করি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে আমি ন্যায়বিচার এবং হারানো সম্মান ফিরে পাবো।’