মিরর প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ :
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আবার বাবা আলী আহাম্মদ চুনকার অবদান সম্পর্কে অনেকেই এখন প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারে না। এখন অনেকেই সবার সামনে সত্য কথা বলতে চায় না।
তিনি বলেন, আমি কোন কিছুই ভয় না পেয়ে ২০০৩ সালে যখন আওয়ামী লীগের অবস্থা ছিল খারাপ তখন থেকেই আমি লড়ে যাচ্ছি। ২০১১ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। আমি কখনই সিদ্ধিরগঞ্জ, শহর বা কদমরসূলকে আলাদা করে দেখিনি। আমি কখনই কোন এলাকাকে খাটো করে দেখি নাই। সব এলাকাতেই সমানতালে উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। হয়তো কোথাও কম বেশী হয়েছে।
সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগর ভবন মিলনায়তনে হলি উইলস্ স্কুলের মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদের বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই প্রদানকালে আইভী এসব কথা বলেন। দৈনিক সংবাদের চিফ রিপোর্টার সালাম যোবায়েরের সঞ্চালনায় সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডার শাহজাহান ভ‚ইয়া জুলহাস, সিনিয়র সাংবাদিক শরীফউদ্দিন সবুজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আইভী বলেন, একটা সময়ে আমার বিরুদ্ধে পত্রিকাগুলো যা খুশী তাই লিখতো। আমি শুধু এতটুকুই বলতাম যে লিখেন কিন্তু গঠনমূলক সমালোচনা করেন। একজন পুরুষ যখন সিটি করপোরেশন চালাতে গিয়ে কাউকে ধমক দেয় কিংবা বকা দেয় তখন কিছুই হয় না। কিন্তু আমি একজন নারী সেটা করলেই দোষ হয়ে যায়। বলা হয় এ নারী ধমক দেয়, বদমেজাজী ইত্যাদি।
তিনি বলেন, এক সময়ে পুরাতন ঐতিহ্য ভুলে বিপদগামী নারায়ণগঞ্জকে সঠিক জায়গায় আনার জন্য একজন নারী নেতৃত্ব দেয় তখনই আমার বিরুদ্ধে পোস্টার সাটানো, আইল্যান্ডের উপর ফাঁসি দেওয়া হয়। কিন্তু আমি পিছপা হয়নি। আমি সেই তথাকথিত বোরকা পড়া নারী না যে লজ্জায় মাথানত করে চলে যাবো। আমি এ শহরে উদ্ভাস্ত না। আমি এ শহরে ভেসে আসি নাই। যখন আমি কাজ শুরু করেছি তখন ভেবে চিন্তেই শুরু করেছি। আমিও আরো ১০জন পুরুষের মতই তাল মিলিয়ে কাজ করে যেতে চাই।
আইভী বলেন, আামি দেশের বাইরে উন্নত রাষ্ট্রে জীবন যাপন করতে পারতাম। কিন্তু আমি সেটা করি নাই। বরং নাড়ির টানে নারায়ণগঞ্জবাসীর টানেই আমি এ শহরে আছি মা ও ভাই বোনদের নিয়ে। আমি বাবাকে দেওয়া ওয়াদা মোতাবেক রাশিয়াতে যাই। কিন্তু কেউ যেতে দেয়নি। পরে আমি মাকে রাজী করাই। বক্তব্যে যোগ করেন মেয়র আইভী।
মেয়র বলেন,সততা নিষ্ঠা ঠিক থাকলে কিছুই অসাধ্য না। অদম্য ইচ্ছা না থাকলে ২০১১ সালে আমাকে ব্যাগ অ্যান্ড ব্যাগেজ করে বিদেশে পাঠিয়ে দিত।
আইভী বলেন, ‘অনেকে বলেন বাইতুল আমানে আওয়ামী লীগের জন্ম। কিন্তু প্রকৃত হবে সেটা হয়েছে মিউচ্যুয়াল ক্লাবে। সেদিন বাইতুল আমানে মিটিং হওয়ার কথা ছিল। তবে বাধার কারণে হয়নি। আর বাইতুল আমানে অনেকবার বঙ্গবন্ধু এসেছিলেন। ওই সময়ে খান সাহেব ওসমান আলী, জোহা কাকা (একেএম সামসুজ্জোহা), মোস্তফা সারোয়ারদের ভূমিকা অপরিসীম।
তিনি বলেন, আমি তো জন্মের পর থেকেই শুনি জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। সুতরাং আমাকে বিএনপি জামায়াত বা অন্য কিছু বানাতে পারবেন না।