ইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ: রাষ্ট্রপতির কাছে বিশিষ্ট নাগরিকদের ফের চিঠি

348

মিরর বাংলাদেশ : বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাসহ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে আবারও চিঠি দিয়েছেন। বর্তমান ইসির বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি, অনিয়মের সাথে জড়িত, গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ দ্বিতীয় চিঠিতেও বহাল রয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারী ওই চিঠিটি দেয়া হয়েছে বলে জানান সুজন সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদিউল আলম মজুমদার। চিঠিতে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে সময় চেয়েছেন দেখা করে অভিযোগগুলো

 

সামনাসামনিভাবে উপস্থাপন করতে চান। এদিকে, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তারা রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন। সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ইসির বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান বিশিষ্ট নাগরিকরা। বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষে রাষ্ট্রপতিকে দেয়া ১৭ জানুয়াীর দ্বিতীয় চিঠিতেও স্বাক্ষর করেন বিশিষ্ট আইনবিদ ও সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।

চিঠিতে তারা বলেন, আমরা কয়েকজন নাগরিক গত ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ আপনার কাছে বাংলাদেশ সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ সংশ্লিষ্ট গুরুতর অসদাচরণ এবং নির্বাচন সংশ্লিস্ট অনিয়ম ও অন্যান্য গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সবিনয় আবেদন জানাই। আমাদের অভিযোগের সপক্ষে অতিরিক্ত কিছু তথ্য আপনার দৃষ্টিগোচর করার জন্য আবারও এই আবেদন। চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে। যাতে এটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। কমিশনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নিয়ন্ত্রণমুক্ত একটি সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটিকে স্বেচ্ছাচারিতামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে নয় কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণের ট্যাক্সের টাকা অভিনব কৌশলে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেয়ার জন্য নয়। বরং নিরপেক্ষভাবে জনকল্যাণে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করার জন্য। কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হল সুষ্ঠু, নিরপেক্ষও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান। নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য ও কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন এবং প্রশিক্ষণ প্রদান তাঁদের রুটিন দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। যার জন্য তাঁরা সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাই নিজেদের দাপ্তরিক পদবীর বাইরে নতুন নতুন পদ সৃষ্টি করে পরিকল্পিতভাবে সাংবিধানিক স্বাধীনতার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের ট্যাক্সের কোটি কোটি টাকা প্রশিক্ষণের নামে ভাগাভাগি করে নেয়া দুর্নীতিমূলক চরম গর্হিতকাজ। যা সম্পর্কে অডিট আপত্তি উঠেছে বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আর একই কাজের জন্য দুইবার সুযোগ-সুবিধা নেয়া আইনের ভাষায় ‘ডাবলডিপিং’। যা অন্যায়, অনৈতিক ও গুরুতর অর্থ সংশ্লিষ্ট অসদাচারণ। রাষ্ট্রপতিকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই অভিযোগ প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় নথি, রেকর্ড ও দলিল, প্রদেয় অর্থ ও অর্থ গ্রহণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সকল লিখিত প্রমাণাদি নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তলব করতে পারে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একমাত্র সুপ্রীম জুুডিসিয়াল কাউন্সিল। অর্থাৎ কেবল মাত্র সুপ্রীম জুুডিসিয়াল কাউন্সিলের যথাযথ তদন্তেই আমাদের অভিযোগুলির সত্যতা প্রমাণিত হতে পারে। চিঠিতে তারা বলেন, আমাদের অভিযোগের বিষয়ে সামনাসামনিভাবে অবগত করার জন্য আপনার সুবিধামত সময়ে সাক্ষাতের অনুরোধের বিষয়ে আমরা আপনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি