মিরর বাংলাদেশ : কয়েকদিন আত্মগোপনে থাকার পর র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ আদালতেও ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটালেন। কড়া পুলিশি পাহারায় বৃহস্পতিবার ঢাকার সিএমএম আদালতে আনার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কান্না জুড়ে দেন এই ‘প্রতারক’। শুধু তাই নয়, নিজেকে করোনায় আক্রান্ত বলেও দাবি করেন দেশজুড়ে আলোচিত সাহেদ।
করোনার নমুনা পরীক্ষা করার নামে মনগড়া রিপোর্ট দেয়া, বিনামূল্যে করোনার চিকিৎসা করার কথা থাকলেও রোগীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করে সাহেদের মালিকাধীন রিজেন্ট হাসপাতাল।
এসব ঘটনায় গত ৬ জুলাই তার হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করে দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে সাহেদের বিরুদ্ধেও মামলাও হয়। কিন্তু এরমধ্যে নয়দিন ধরে গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর বুধবার সকালে র্যাবের হাতে ধরা পড়েন রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদ। এরপর আজ তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়ে আদালতে হাজির করে ডিবি। শুনানি শেষে বিচারক ১০ দিনেরেই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে রিমান্ড শুনানি চলাকালে কাঠগড়া থেকে বিচারকের উদ্দেশে সাহেদ বলেন, আমি কি একটা কথা বলতে পারি? এটি বলেই কাঠগড়ার ভেতরে কান্নাকাটি শুরু করেন সাহেদ।
তিনি বলেন, আমি দেড় মাস ধরে করোনায় আক্রান্ত। আমার বাবা করোনায় মারা গেছেন। আমি মার্চে প্রথম দিন যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যাই, তখন তারা আমাকে আমার হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করতে বলেন। তখন আমি বলি আমার লাইসেন্সের ঘাটতি আছে। তখন তারা বলে যে লাইসেন্স নবায়নের জন্য সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দেন। আমি তাদের কথা মতো টাকা জমা দেই। সারা দেশে করোনা চিকিৎসার কাজ বেসরকারিভাবে আমরাই শুরু করেছি। তারপরেও আমার সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সাহেদ, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভজ ও সাহেদের প্রধান সহযোগী তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে আদালতে হাজির করে উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক এস এম গাফ্ফার আলম।
অপর দিকে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে সাহেদ-মাসুদ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আর তরিকুলের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।