কান্নার কারনে বেঁচে গেলো ওরা ৫ শিশু

373

* নারায়ণগঞ্জে পাচারের সময় ৫শিশু উদ্ধার, আটক-১

মিরর প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ :

নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে মঙ্গলবার রাতে একসঙ্গে কান্না করছিল পাঁচ শিশু। ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী চেষ্টা করছে কান্না থামাতে। তবে কিছুতেই থামছিল না তারা।

রেলস্টেশনে যাত্রীসহ অন্যদের সন্দেহ বাড়তে থাকে। সেখানে কয়েকজন কিশোরীর কাছে শিশুদের কান্নার কারণ জানতে চান। সেই সঙ্গে জানতে চান শিশুরা তার কী হয়?
জবাবে ওই কিশোরী অসংলগ্ন উত্তর দেয়।

জিআরপি পুলিশকে খবর পেয়ে থানায় নিয়ে যায় তাদের। তারপর বেরিয়ে আসে প্রকৃত ঘটনা।
মঙ্গলবার রাতে
থানায় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কিশোরী সুমি ওরফে ময়না স্বীকার করে, পাচারের উদ্দেশ্যে ওই পাঁচ শিশুকে সে অপহরণ করেছে। উদ্ধার হওয়া পাঁচ শিশুর মধ্যে তিনজনই আপন ভাইবোন। যাদের মধ্যে দু’জন যমজ।

নারায়ণগঞ্জ
জিআরপি পুলিশের ভাষ্য, কান্নাই শিশুদের পাচার হওয়া থেকে রক্ষা করেছে। উদ্ধার হওয়া শিশুরা হলো- ঢাকার শ্যামপুর থানার জুরাইন তুলার বাগিচা এলাকার হীরা মিয়া ও নাজমিন বেগম দম্পতির যমজ ছেলে আলিফ (৫), লাম (৫) ও মেয়ে মিম (৪), একই এলাকার আবুল হাসান ও শাহীনুর বেগমের মেয়ে আরিফা (৬), প্রতিবেশী সম্রাট ওরফে রুবেল ও আয়নামতি দম্পতির মেয়ে সিনহা (৭)।

শিশুদের অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার সুমি ওরফে ময়নার স্বামীর নাম রুবেল মিয়া বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তার বাবার নাম আনোয়ার ও মায়ের নাম রুবি বেগম। তাদের প্রকৃত বাড়ি কোথায় তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। রাতেই সুমিসহ উদ্ধার পাঁচ শিশুকে কমলাপুর জিআরপি পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জিআরপি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোখলেসুর রহমান বলেন, শ্যামপুরের জুরাইন তুলার বাগিচা এলাকার আবুল হাসানের বাড়িতে স্বামী রুবেল মিয়াকে নিয়ে ভাড়া থাকত সুমি ওরফে ময়না (১৭)। সে আন্তঃজেলা মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য। তুলার বাগিচা থেকে মঙ্গলবার বিকেলে আরও তিন দুর্বৃত্তের সহায়তায় সুমি তার বাড়ির মালিকের মেয়ে আরিফা, আরিফার মামাতো বোন মিম, মামাতো ভাই আলিফ ও লাম এবং প্রতিবেশী সিনহাকে পাচারের উদ্দেশ্যে কৌশলে অপহরণ করে। এরপর ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বিকেলে ট্রেনে সন্ধ্যায় পাঁচ শিশুসহ সুমি নারায়ণগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছে।

পুলিশ জানায়, সুমি স্বীকার করেছে তার সঙ্গে পাচার চক্রে আরও তিনজন রয়েছে। শিশুদের মধ্যে একজন তার বাবার মোবাইল নম্বর বলতে পেরেছে। ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে শিশুদের অভিভাবকরা জানতে পারেন তাদের সন্তানরা অপহৃত হয়েছে। এরপর তারা কমলাপুরে জিআরপি থানায় যোগাযোগ করেন।

এদিকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে থানায় রাতে পাঁচ শিশু ও সুমিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে নারায়ণগঞ্জ জিআরপি পুলিশের এসআই মোখলেস জানিয়েছেন। ##