ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে কাজ করতে হবে —প্রধানমন্ত্রী

332
ছবি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

মিরর বাংলাদেশ : জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার কোনো মাধ্যম ছাড়া মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা সরাসরি উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছে দিতে ভাতা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ সচিব মোঃ জয়নুল বারী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেবল সরকারই নয়, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করার জন্য প্রত্যেককে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে, কোনো লোক দরিদ্র, গৃহহীন বা তাদের নিজের অঞ্চলে সমস্যায রয়েছে তা খুঁজে বের করুন।’ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এখন থেকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির অর্থ উপকারভোগীদের মোবাইল অ্যাকাউন্টে (নগদ ও বিকাশ) পৌঁছে যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, অসহায় মানুষের নাম জানতে পারলে সরকার অবশ্যই তাদের জন্য ঘর, আবাসন ও অন্যান্য সহায়তার ব্যবস্থা করবে।
‘একসাথে কাজ করলে আমরা অবশ্যই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে চায় এবং মুজিব বর্ষে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত) সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য আবাসন সুবিধা সরবরাহের পাশাপাশি শতকরা শতভাগ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনতে চায়।
‘আমরা প্রত্যেককে বাড়ি এবং একটি আশ্রয় প্রদান করব। এ লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ দিয়ে আমরা প্রতিটি বাড়ি আলোকিত করব,’ বলেন তিনি।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচেষ্টা ছিল বিতরণ প্রক্রিয়ায় সব মধ্যস্বত্বভোগীদের অপসারণ করে ভাতা সরাসরি উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার।
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছি যাতে সামাজিক সুরক্ষার ভাতাগুলো সঠিকভাবে সঠিক মানুষের (সুবিধাভোগীদের) হাতে পৌঁছায় এবং এ প্রক্রিয়াতে যেন কোনো মধ্যস্বত্বভোগী না থাকে। উপকারভোগীদের অর্থ সরাসরি তাদের কাছে যাবে এবং তারা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী সেই অর্থ ব্যয় করতে পারবেন।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয় এবং আইসিটি বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা সরকার থেকে ব্যক্তি (জিটুপি) পদ্ধতিতে বিতরণ ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, ‘নগদ ও বিকাশ পরিষেবাদির মাধ্যমে ভাতাগুলো পাঠানো হবে। এর ফলে সকলে (উপকারভোগী) উপকৃত হবেন।’
পরে চাঁদপুর, পিরোজপুর, লালমনিরহাট ও নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংযুক্ত হয়ে উপকারভোগীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।