জামায়াত কোন দলের সঙ্গে নাই, তবে সরকার পতনের আন্দোলনে আছে

306

ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে জামায়াতের  বৈঠক

মিরর বাংলাদেশ :
জামায়াতে ইসলামী কোন দলের সঙ্গে নাই। তবে তারা সরকার পতনের আন্দোলনে আছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে এমন জবাব দেন, জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

শনিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কার্যালয়ে ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় বর্তমান সরকারের অধীনে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যাবে না বলেও জানান মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন চাই না। কেয়ারটেকার ব্যবস্থায় নির্বাচন হলেই কেবল আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। এ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। কেয়ারটেকার সরকার অথবা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায় না।
জামায়াতে ইসলামীর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক কেমন, জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমরা কোনো দলের সঙ্গে নেই। আমরা সরকার পতনের আন্দোলনে আছি। আর বিএনপি বিএনপির মতো আছে।
জামায়াতের এ নায়েবে আমীর বলেন, আলোচনা সভায় বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন ও কেয়ারটেকার নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে। জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম কর্তৃক উত্থাপিত কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার নীল নকশা হিসেবে কেয়ারটেকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। সেটিই আমরা যৌক্তিকভাবে তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, কেনো কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দরকার।

তাহের বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের নামে যে প্রহসন ছিল তা বাংলাদেশের মানুষ জানে। তারা ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের দিনই ১৫৪ জনকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছে। নির্বাচনের আগেই যদি নির্বাচিত ঘোষণা আসে সেটিকে নির্বাচন বলা যায় না। আগের দিন রাতেই নির্বাচন হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমাদের জনসভা করতে দিচ্ছে না, অফিস খুলতে দিচ্ছে না। এখনই যদি এমন হয় তাহলে নির্বাচনের দিন কীভাবে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে? সেটা সম্ভব নয়। তাই এ সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন মানি না।

সংলাপের বিষয় এলে জামায়াত বসবে কি-না জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, অতীতে কোনো সংলাপ পজিটিভ ফলাফল আনেনি। তাই সংলাপে এসে লাভ হবে না। কেয়ারটেকারের অধীনে নির্বাচন কিংবা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়ে সংলাপ হলে আমরা বসতে পারি।

ইইউ প্রতিনিধিদল আপনাদের নিবন্ধন বিষয়ে কোনো আলোচনা করেছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্ধেকের বেশি দলের নিবন্ধন নেই। আমরা নিবন্ধিত দল। আমরা ৫টি নির্বাচনে নিবন্ধিত দল হিসেবে অংশ নিয়েছি। ২০১০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের নিবন্ধন বাতিল করে। আমরা সে বিষয়ে রিট করি। আশা করি নির্বাচনের আগেই আপিল বিভাগে যদি সুষ্ঠু বিচার হয় তাহলে আমরা আবার নিবন্ধন ফিরে পাবো।

এসময় তিনি আগামী ২২ তারিখ চট্টগ্রামে জামায়াতের জনসভার কথা জানিয়ে বলেন, আমরা চট্টগ্রামে জনসভার অনুমতি চেয়েছি। আশা করি সে অনুমোদন আমরা পাবো।

বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আব্দুর রব এবং জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।