* অর্থ আত্মসাৎ ও নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ
মিরর বাংলাদেশ : অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থ আত্মসাৎ ও নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের পদ থেকে রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে অব্যাহতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া সাময়িক বহিস্কারের পাশাপাশি দল থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো: হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত চিঠি থেকে রিয়াজের অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। অব্যাহতি পত্রে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র ৪৭ (১) ধারা অনুযায়ী দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ড ও নৈতিক স্খলণজনিত কারণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জনাব রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে অব্যাহতি দেয়া হলো। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কেন আপনাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না এই মর্মে লিখিত জবাব দেয়ার জন্য জানানো হলো।” সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অব্যাহতি পাওয়া দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের নানা নেতিবাচক কর্মকান্ড সংবলিত একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। ওই অডিও ক্লিপে রাজধানীর শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানিয়ে বলেন, স্যার, আমরা অসহায় অবস্থায় আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আমাদের বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ আমাদের শিক্ষিকাদের ও ছাত্রীদের নানাভাবে যৌন হয়রানি করে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ছিল তার সবটাই তিনি শেষ করে ফেলেছেন। আমরা প্রায় এক মাস ধরে বেতন পাই না। উনি আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দেন, আমরা মুখ খুলতে সাহস পাই না। উনি আমাদের ভয়ভীতি দেখান, উনার সাথে শিক্ষামন্ত্রীর বিশেষ সম্পর্ক আছে এজন্য উনাকে কেউ ওই পদ থেকে সরাতে পারবে না। ওই শিক্ষিকা আরো জানান, প্রতিষ্ঠানটি অনেক সুন্দর ছিল। গত দুই বছরে উনি শেষ করে দিয়েছেন। এখানকার শিক্ষক এবং ছাত্রীরা সকলেই আমরা ভীত সন্ত্রস্ত। ছাত্রীদের অভিভাবকরা স্কুলে পাঠাতে সাহস পাই না, আমরা খুব অসহায়ত্ব বোধ করছি। ওই অডিও ক্লিপে গভর্নিং বডির সভাপতির হাত থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাঁর স্মৃতি বিজড়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করার আহবান জানান ওই শিক্ষিকা। এছাড়াও স্থানীয় এমপির কাছেও ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রতিকার চেয়ে একটি স্মারক লিপি দিয়েছেন। বিষয়টি ভাইরাল হলে গত বৃহস্পতিবার শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের গভনির্ং বডির সভাপতির পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ। এরপরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম গতিশীল রাখার জন্য একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে ওই স্কুলের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রসঙ্গে শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নয়া দিগন্তকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পরই সঠিক তদন্তের জন্য আমি গভর্নিং বডির সভাপতির পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছি। আমি মনে করি, এ পদে থাকলে অনেকেই বলবে, সভাপতি নিজেই তদন্ত কাজে প্রভাব সৃষ্টি করছে। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমি চাই সঠিক তদন্ত হোক। অর্থ আত্মসাৎ,যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির চিঠি পাওয়া প্রসঙ্গে রিয়াজ বলেন, আমি চিঠির জবাব দেব।