তারেক রহমানের ঈদ উপহার আওয়ামী পরিবারকে দিলেন রনি

297

 * নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদলের ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

মিরর বাংলাদেশ :
বিএনপির নির্যাতিত নেতা কর্মীদের জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপহার সামগ্রী বিতরণ নিয়ে প্রতারনা করার অভিযোগ তুলেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল। গত সাত বছর ধরে বিএনপির নির্যাতিত নেতা কর্মীদের মাঝে এ উপহার সামগ্রী বিতরণ না করে আওয়ামীলীগ ঘরোনার পরিবারের মাঝে তা বিতরন করা হচ্ছে। এঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দলীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদল নেতারা ।

বুধবার দুপুরে ঢাকা বিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নাজমুল হাসান বাবু। এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি সাগর সিদ্দিকী, সাজ্জাদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান,মোরশেদ আলম,সাজ্জাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মেহদী, ফতুল্লা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক লেলিন আহমেদসহ অন্যান্য ছাত্রদল নেতারা।
লিখিত বক্তব্যে নাজমুল হাসান বাবু অভিযোগ করে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্যাতিত নেতাকর্মীদের প্রতিবছর ঈদ কেন্দ্রিয় উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।এছাড়া বছরের অন্যান্য সময়েও তিনি আর্থিকভাবে সহায়তা করে থাকেন। কিন্ত তারেক রহমানের দেয়া উপহার সামগ্রী দলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের না দিয়ে নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্য সচিব ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান রনি আওয়ামীলীগ পরিবারের মাঝে বিতরণ করেন। মশিউর রহমান রনি ফতুল্লা থানা সৈনিকলীগের সভাপতি প্রয়াত মোখলেসুর রহমানের পরিবারের কাছে গত ৭ বছর ধরে তারেক রহমানের উপহার সামগ্রী বিতরণ করছেন। বিএনপির নির্যাতিত নেতা কর্মীরা এটা মেনে নিতে পারে না।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয় , সৈনিক লীগ নেতা মোখলেসুর রহমান ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও ঝুট সন্ত্রাসী ছিলেন এবং মাদক ও ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের সাথে অভ্যন্তরিণ কোন্দলের জের ধরে মোখলেসুর রহমান খুন হয়। প্রয়াত সৈনিক লীগ নেতা মোখলেসুর রহমান হত্যা মামলার এজহারে মোখলেসুর রহমানের স্ত্রী ও মশিউর রহমান রনির বড় বোন মাহমুদা আক্তার বাদী হয়ে তার স¦ামীকে বৃহত্তর এনায়েতনগর ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ড এর বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। অথচ রনি দলের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে তারেক রহমানের উপহার সামগ্রী আওয়ামী পরিবারের মাঝে বিতরণ করেন।
ছাত্রদল নেতারা জানান, মশিউর রহমান রনি বিভিন্ন সময় তার বক্তব্যে তার বোন জামাই মোখলেসুর রহমানকে তার কারণে গুম ও হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও তারেক রহমানের কাছ থেকে সহানুভুতি আদায়ের মাধ্যমে তার কাঙ্খিত অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছেন। আমরা এবিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। দলের নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমরা আশাবাদী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয় , সৈনিক লীগ সভাপতি মোখলেস হত্যা মামলায় ২নং স্বাক্ষী হিসেবে মশিউর রহমান রনির মামা ফতুল্লা এনায়েতনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মতিউর রহমান প্রধান, ৩নং স্বাক্ষী রনির বাবা মোস্তফা কামাল ও ৮নং স্বাক্ষী রনির বড় ভাই রুবেল স্বাক্ষ্য প্রদান করেছেন। এছাড়াও এ হত্যার প্রতিবাদে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল সহ ফতুল্লা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী জানান। বিভিন্ন গনমাধ্যমে এসব সংবাদ ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদল নেতারা জানান, নারায়নণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফেল প্রধান ও মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি ও তোলারাম কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক রিয়াদ প্রধান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা মশীউর রহমান রনি আপন মামাতো-ফুফাতো ভাই ও একই পরিবারের সদস্য এবং একই পরিবারে বসবাসরত হওয়ার কারণে মামা ও মামাতো ভাইদের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজপথের বিএনপির সক্রিয় নেতা কর্মীদের দমন পীড়নের মাধ্যমে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান তৈরী করে আসছে। বিভিন্ন সময়ে রনির অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারণে মামাতো ভাইদের সহযোগীতায় নিজ দলীয় নেতা কর্মীদের উপর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতা কর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক থাকার কথা বলে রনি পদ-পদবীর লালসা দেখিয়ে বিগত দিনে নেতাকর্মীদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তোলেন তারা।