দক্ষিণাঞ্চলে বেশি করে সাইলো নির্মাণ করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী

367

মিরর বাংলাদেশ: দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বেশি করে সাইলো নির্মাণ করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব অঞ্চলে ধান বেশি উৎপাদন হওয়ায় তা সংরক্ষণের বিষয়টি চিন্তায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দক্ষিণাঞ্চলে যেন বেশি করে সাইলো করা হয়। ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা– এসব জায়গায়। এসব জায়গায় প্রচুর ধান হয়, সুতরাং সাইলো যেন নির্মাণ করা হয়।’ মঙ্গলবার একনেক সভায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩০টি সাইলো নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। একনেক সভায় ওই প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ আধুনিক ধানের সাইলো নির্মাণ (প্রথম ৩০টি সাইলো নির্মাণ পাইলট প্রকল্প) প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। জানুয়ারি ২০২১ থেকে জুন ২০২৩ মেয়াদকালের এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪০০ কোটি ২২ লাখ টাকা।
প্রকল্প অনুযায়ী, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও সদর, ফরিদপুর সদর, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, জামালপুরের মেলান্দহ, শেরপুরের শ্রীবর্দী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, নোয়াখালী সদর, কুমিল্লা সদর, দিনাজপুর সদর ও বিরল, ঠাকুরগাঁও সদর, পঞ্চগড়ের বোদা, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা, নওগাঁর শিবপুর, রানীনগর, পাবনার ঈশ্বরদী, বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রাম, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল, সিলেটের কানাইঘাট, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, নড়াইল সদর, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, পটুয়াখালী সদর ও কলাপাড়া, ভোলার চরফ্যাশনে সাইলো নির্মাণ হবে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আরও নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘¯øুইসগেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আপত্তি আছে। সুইসগেটে আমাদের খরচ হয়, পরে সেটা কাজে লাগে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা ঠিক না। মূল কথা হলো পানির প্রবাহে অস্বাভাবিক কোনও বাধা সৃষ্টি করবেন না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আলু রফতানির চেষ্টা করতে হবে। কারণ, এটা নিয়ে কথা উঠেছিল যে আমরা আলু রফতানি শুরু করেছিলাম। আলুতে সমস্যা হওয়ার কারণে বিদেশিরা কিনতে চায়নি।’
চিলমারী নদীবন্দর প্রকল্প অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইলেন, ‘হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দরে…’। এটিসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ২১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ৬৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৭৯৪ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘চিলমারী নদীবন্দরটি ঐতিহ্যবাহী বন্দর। ৪৭ সালে দেশ ভাগের পর আসামের সঙ্গে সংযোগ ভেঙে যাওয়ায় এর গুরুত্ব নষ্ট হয়ে যায়। এখন আবার নতুন করে ভারতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে বন্দরটির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা হবে।’
তিনি জানান, এ প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিখ্যাত একটি গান আছে না, হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দরে… একটি গান আছে না। কেউ কি বলতে পারবেন?’ এ সময় তিনি গানটি গেয়ে ওঠেন।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সরকারি কর্মকাÐেও ১-২ মাসের প্রশিক্ষণ না দিয়ে ১০ মাসের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে উন্নতমানের গবেষণার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। নদীগুলো মেইটেনেন্স ড্রেজিং করারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি যেখানে সেখানে সুইস গেট না করারও তাগিদ দিয়েছেন।
এম এ মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলু রফতানি করতে টিস্যু কালচারের পাশাপাশি অন্যান্য ফসলেরও টিস্যু কালচার বাড়ানোর কথা বলেছন। এছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশি করে ধানের সাইলে নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্প গুলো হচ্ছে, বরিশাল (দিনেরারপুল) ল²ীপাশা-দুমকির ২৭তম কিলোমিটারে পাÐব-পায়রা নদীর উপর নলুয়া-বাহেরচর সেতু নির্মাণ প্রকল্প; মধুপুর-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প; চিলমারী এলাকায় নদী বন্দর নির্মাণ প্রকল্প; বিপিএটিসির প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প; বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস এর আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প; সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলাধীন ব্রা²ণগ্রাম-হাটপাঁচিল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় যমুনা নদীর ডানতীর সংরক্ষণ এবং বেতিল স্পার-১ ও এনায়েতপুর স্পার-২ শক্তিশালীকরণ কাজ প্রকল্প; ঠাকুগাঁও জেলার টাঙ্গন ব্যারেজ, বুড়িবাধ ও ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পগুলো পুনর্বাসন, নদী তীর সংরক্ষণ ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প; জীব প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষিবীজ উন্নয়ন ও বর্ধিতশরণ প্রকল্প; গাজীপুর জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন