দেশে অকাল মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট

518

 

সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ :
দেশে অকাল মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এসব কথা বলেছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল আলিম। তিনি বলেন, দেশে বছরে ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায় ,যার অন্যতম কারণ ট্রাান্স ফ্যাট।

খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) ও বিদ্যমান পরিস্থিতি, উত্তোরণের উপায় এবং এ বিষয়ে গণমাধ্যমের করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করতে  গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)’র দু’দিনব্যাপী কর্মশালার শেষদিনে বৃহস্পতিবার  তিনি একথা বলেন।

এদিকে বৈশ্বিক হিসাবে ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ১ লাখ ২৮ হাজার ৫৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল হৃদ্রোগে। মৃত্যুর দিক থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে স্ট্রোক ও ক্যান্সার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া তথ্যে জানা যায়, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ ট্রান্স ফ্যাট গ্রহনের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সাধারণত ভাজা পোড়া ও বেকারি খাবারে শিল্পোৎপাদিত ট্রাান্সফ্যাট থাকে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, এহজন ব্যক্তির দৈনিক ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের পরিমান হওয়া উচিত মোট খাদ্যশক্তির ১শতাংশের কম, অর্থাৎ দৈনিক ২০০০ ক্যালোরির ডায়েটে তা হতে হবে ২.২ গ্রামেরও কম।

এপ্রসঙ্গে ড. মোহাম্মদ আবদুল আলিম আরো বলেন, মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ উচ্চহারে হৃদরোগ, হৃদরোগজনিত মৃত্যু, স্মৃতিভ্রংশ (ফবসবহঃরধ) এবং স্বল্প স্মৃতিহানি (পড়মহরঃরাব রসঢ়ধরৎসবহঃ) জাতীয় রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়নের (বিএমএ) শহীদ ডাক্তার শামসুল আলম খান মিলন সভাকক্ষে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হয়।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল (পিএইচও) যা বাংলাদেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে অধিক পরিচিত। এতে আরো জানান হয়, স¤প্রতি ঢাকার শীর্ষস্থানীয় পিএইচও ব্র্যান্ডসমূহের নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত ২% মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পেয়েছেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর গবেষকগণ। গবেষণায় প্রতি ১০০ গ্রাম পিএইচও নমুনায় সর্বোচ্চ ২০.৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাট এর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে, যা ডবিøউএইচও এর সুপারিশকৃত মাত্রার তুলনায় ১০ গুণেরও বেশি। ভেজিটেবল অয়েলের সাথে হাইড্রোজেন যুক্ত করলে তেল জমে যায় এবং ট্রান্সফ্যাট উৎপন্ন করে। এই পারশিয়াল হাইড্রোজেনেটেড অয়েল দেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত।

এতে অন্যান্য বক্তারা অভিযোগ করেন, দেশে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা না থাকায় মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে জনস্বাস্থ্য। ট্রান্সফ্যাটের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে ডব্লিউএইচও ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ থেকে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট নির্মূলকে অগ্রাধিকাকৃত লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে নির্ধারণ করেছে। এমতাবস্থায়,

এতে আরো বক্তব্য রাখেন গেøাবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক জুবায়ের ,ট্রান্স ফ্যাট প্রজেক্টের টিমলিডার মো. হাসান শাহরিয়ার।