না’গঞ্জে কঠোর প্রশাসন,পরিবহন না পেয়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিক 

340

মিরর বাংলাদেশ :

নারায়ণগঞ্জে লকডাউনের প্রথম দিনে কঠোর ভূমিকায় রয়েছে প্রশাসন৷ সড়ক-মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ৷ এদিকে পরিবহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন কারখানামুখী শ্রমিকরা৷ সরকারঘোষিত কড়া বিধিনিষেধের মধ্যেও পোশাক কারখানা খোলা রেখে পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা৷

বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে সারাদেশে ‘কঠোর লকডাউন’ শুরু হয়েছে৷ লকডউন কার্যকরে জেলায় জেলায় সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে৷ নারায়ণগঞ্জ ডিসিও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে সেনাবাহিনীর ৫টি দল ও ৩ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে৷ এছাড়া জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ২০ টিম ও জেলা পুলিশের ৩১ টিম কাজ করছে৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য রোভার স্কাউট ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে৷

সকালে সরেজমিনে শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের মন্ডলপাড়া, ২ নম্বর গেট, চাষাঢ়া চত্ত্বর, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখসহ কয়েকটি স্থানে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ৷ এছাড়া অন্যান্য সড়ক-মহাসড়কগুলোতেও রয়েছে পুলিশ-ব়্যাব-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল৷ সেন্ট্রাল খেয়াঘাট, চাষাঢ়া চত্ত্বরসহ কয়েকটি স্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ৷

সকাল আটটার দিকে চাষাঢ়ায় কয়েকটি মডেল ডি ক্যাপিটাল, ফকির নিটওয়্যার, নিট কনসার্নসহ রপ্তানীমুখী পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জটলা৷ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শ্রমিক পরিবহন না করায় শ্রমিকবাহী বাস থেকে থামিয়ে তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

সদর উপজেলার সৈয়দপুরের ফকিরবাড়ি থাকেন জাকির হোসেন৷ চাকরি করেন সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলির পোশাক কারখানা নীট কনসার্নে৷ তিনি বলেন, ফকিরবাড়ি থেকে দ্বিগুন ভাড়ায় শহরের ডিআইটি আসতে ইজিবাইকে ওঠেন৷ পুলিশি বাধায় অর্ধেক রাস্তায় নেমে যেতে হয়৷ বাকি পথ হেঁটে এসে ডিআইটি থেকে কারখানার বাসে ওঠেন৷ তবে সেই বাস থামিয়ে দেওয়া হয় চাষাঢ়ায়৷ একই স্থানে সেন্সিবল গার্মেন্টসের যাত্রীবাহী তিনটি বাস থামিয়ে প্রায় দেড়শ’ শ্রমিককে নামিয়ে দেওয়া হয়৷

ক্ষুব্দ-বিরক্ত পোশাক শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের ফ্যাক্টরি খোলা রাখছে কিন্তু গাড়িগুলো কেন বন্ধ রাখলো? সব যখন বন্ধ তাহলে ফ্যাক্টরিও বন্ধ দিক৷ আমাদের এইভাবে হয়রানি করার কোনো মানে নেই৷ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, লকডাউনের নামে আমাগো মতো গরীবরে যেন কষ্ট না দেয়৷’

মডেল ডি ক্যাপিটালের শ্রমিক ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘কর্মস্থলে না গেলে চাকরি থাকবে না, না খেয়ে মরতে ববে তখন৷ মন্ত্রী, সচিব থেকে শুরু করে বড়লোকরা তাদের প্রাইভেট কার দিয়ে যাচ্ছে৷ আমাদের তো প্রাইভেট করা নাই৷ এইযে আমরা পায়ে হেঁটে যাচ্ছি৷ এতে কি আমাদের হয়রানি হচ্ছে না, ভোগান্তি হচ্ছে না? প্রতিটি শ্রমিককে কর্মস্থলে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব সরকারের৷’

চাষাঢ়ায় দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান ফারুক বলেন, সকাল ছয়টা থেকে আমরা দায়িত্বে আছে৷ জরুরি পরিষেবা, পণ্যবাহী গাড়িগুলো আমরা সহজে যেতে দিচ্ছি৷ প্রতিটি মানুষ ও গাড়ি চেকিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে৷ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে৷