মিরর প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়কে প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে বিক্ষিপ্ত ভাবে পুলিশের সাথে হকারদের সংর্ঘষ হয়েছে। এসময় পথচারী, গণমাধ্যম কর্মী ও পুলিশসহ প্রায় ১০ জনের মতো আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকেলে ৪টার পর থেকে শুরু হয়ে ওই ঘটনা চলে রাত প্রায় ৭টা পর্যন্ত। এতে নগর জুড়ে সৃষ্টি হয় ভয়ংকর এক পরিস্থিতি। পুরো শহরের ভয়াবহ যানজট তৈরী হয়।
হাকার, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবারও হকাররা ফুটপাতে বসার দাবীতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিরটি নিয়ে হকাররা চাষাড়া চত্বর প্রদক্ষিন করতে গেলে পুলিশ হকারদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে হকাররা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করে। এতে পুলিশ, মিডিয়া কর্মীসহ রাস্তার অনেক পথচারি আহত হয় এবং অনেক গাড়িরও ক্ষয় ক্ষতি হয়। একটা সময় পুলিশ সমবায় মার্কেটের সামনে ও হকাররা সায়াম প্লাজা সামনে অবস্থান নেয়। হকাররা সে সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। বিক্ষুব্দ হকাররা নারায়ণগঞ্জ ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নি সংযোগ করে। অবরোধের কারনে পুরো বঙ্গবন্ধু সড়কসহ আশে-পাশের সড়ক গুলোতেও যানবাহন চলাচল সম্পুর্ন বন্ধ হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু সড়কের প্রায় ১ ঘন্টা রণক্ষেত্রের প্রভাব পুরো শহর জুড়ে পরে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলার পর সন্ধ্যার দিকে পুলিশ বিক্ষোভকারী হকারদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। এসময় হকার নেতা আসাদসহ আরো কয়েকজন হকারকে আটক করে পুলিশ।
উত্তপ্ত পরিস্থিতর মধ্যে বিকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) মাহিন ফরাজি সাংবাদিকদের বলেন, ফুটপাত সবসময় খালি রাখতে হবে। যাতে পথচারিদের হাটতে কোন রকমের সমস্যা না হয়, হাই কোর্টের এই নির্দেশ অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু আপনারা দেখছেন হকাররা এ নির্দেশ মানছে না। আমরাও চাই হকারদের পুর্ণবাসনের ব্যবস্থা করা হউক, কিন্তু এভাবে সহিংসতার পথ বেছে নেয়াটা একেবারে কাম্য নয়।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ জামান, ওসি তদন্ত মুস্তাফিজুর রহমানসহ বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা ও সদস্য।
এর কিছুক্ষন পর সন্ধায় নগরীর মিশনপাড়ার সামনেও হকারদের অবস্থান জানতে পেরে পুলিশ দ্রুত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। চাষাড়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সাজোঁয়া যানসহ ডিবিসদস্যদের নিয়ে চাষাড়া, মিশনপাড়া, ডনচেম্বার এলাকায় নিয়ন্ত্রনে নেয়। ঘটনাস্থলে চলে আসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোঃ মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী, সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোঃ সালেহ উদ্দিন আহম্মেদ।
প্রায় চার ঘন্টা নগর জুড়ে অপ্রিতিকর পরিস্থিতির পর সব কিছু নিয়ন্ত্রনে আসলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোঃ মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসতে না দেয়ার জন্য মহামান্য আদালতের নির্দেশ দিয়েছে। তাই মাননীয় পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ বঙ্গবন্ধু সড়র হকার মুক্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। কিছুদিন যাবত হকাররা ফুটপাতে বসার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ হকাররা রাস্তায় আগুন দিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে। এ ঘটনায় আমাদের ৮/১০ জন পুলিশ সদস্য আহতও হয়েছে। যারা এরকম ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শিগ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।