ফতুল্লায় প্রাইম টেক্সটাইলে বেতনের দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ,ব্যাপক ভাংচুর

664

মিরর প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ :
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় প্রাইম টেক্সটাইল মিলে বেতনের দাবিতে  বুধবার দিনভর শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভের একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা মিলে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনার পিছনে কতিপয় বহিরাগত শ্রমিক নেতার ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কারখানার মালিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ।
শ্রমিক, মালিক ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ফতুল্লার পাগলা নন্দলালপুরের প্রাইম টেক্সটাইল মিলে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে। পূর্বের কোন বকেয়া না থাকলেও গত সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বাকি ছিল প্রায় ৪শ শ্রমিকের। যদিও ইতিমধ্যে শিফটিং করে অন্যান্য শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু ওই চারশ শ্রমিক বেতন না পাওয়ায় গতকাল সকাল থেকেই কারখানায় বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার দরজা জানালা ও বাইরের থাই গøাস ভাংচুর শুরু করে। খবর পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে।
কারখানায় উপস্থিত হন শ্রমিকলীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশের সংগঠন ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের জেলার নেতা বিপ্লব আহমেদ রাজু, লিটন শিকদার, নুরুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন। তবে শ্রমিকরা বিক্ষোভ চালিয়ে আরো নতুন নতুন দাবি যুক্ত করে জানায়, কারখানায় কাজ করলেও তারা সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরী ও ঈদ বোনাস পাচ্ছেনা। তাই সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরী ও ঈদ বোনাস তাদের প্রদান করতে হবে। তবে মালিকপক্ষের দাবি দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করে গেলেও গতকাল সকালে বেশকিছু বহিরাগত শ্রমিক নেতার ইন্ধনে শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে দিয়ে কারখানায় ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।
প্রাইম টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপক সুদীপ কুমার জানান, ১৯৯১ সাল থেকে টেক্সটাইল মিলটি যাত্রা শুরু করে ২০১৬ সালে কম্পোজিটে পরিণত হয়। কখনো শ্রমিক অসন্তোষ হয়নি। আর ৫হাজার শ্রমিকের মাঝে শিফটিং প্রথায় বেতনও যথাযথভাবে পরিশোধ করা হয়। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের বেতন ৪০০ শ্রমিকের বাকী ছিল এবং তা আজ কালের মধ্যে পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু বহিরাগত কিছু শ্রমিক নেতার উস্কানীতে গতকাল শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে মিলে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। তিনি বলেন, বাকী শ্রমিকদের বেতন গতকালই পরিশোধ করা হয়েছে।
শ্রমিকলীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশের সংগঠন ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি বিপ্লব আহমেদ রাজু জানান, কারখানাটিতে কোন বহিরাগত শ্রমিক নেতার ইন্ধন ছিলনা। ভাংচুরের পিছনে মালিক পক্ষের তৃতীয় কোন পক্ষকে দায়ী করে রাজু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকরা বেতন ঠিকমত পাচ্ছিলনা। তাছাড়া সরকার ঘোষিত নূন্যতম মজুরী এবং ঈদ বোনাস থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছিল। শ্রমিকদের ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং শ্রমিকদের দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে সমাধানের চেষ্টা করি।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন জানান, বিষয়টি সমাধান কল্পে দিনভর থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ, শ্রমিক নেতা ও মালিকপক্ষ দিনভর চেষ্টা করেছে। মালিকপক্ষ এব্যাপারে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে যে আগামি মাস থেকে যথাযথ নিয়মে বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি পরিশোধ করবে। তিনি জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে আছে।