ফতুল্লা হোটেলে কুকুরের মাংস সরবরাহ সন্দেহে তুলকালাম, ২ যুবককে পিটুনি

594

* কুকুরের নয় ওইগুলো মহিষের মাংস : পুলিশ 

মিরর বাংলাদেশ :

ফতুল্লার পাগলা বাজারে হোটেলে কুকুরের মাংস সরবরাহের অভিযোগে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। এঘটনায় দুই যুবককে মারধর করেছে স্থানীয়রা। ফতুল্লা থানায় এ নিয়ে একটা সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, কুকুরের মাংস সরবরাহের ঘটনাটি মিথ্যা। যেখানে কুকুরের মাংসের কথা বলা হচ্ছে মুলত সেগুলো মহিষের মাংস।
ভারত থেকে এসব মাংস আমদানি করে হোটেলগুলোতে সরবরাহ করে আসছিল তারা।
জানা গেছে,
শনিবার রাত ১টায় পাগলা বাজার এলাকা থেকে মাংসসহ দুই যুবককে আটক করে স্থানীয়রা। এ সময় দুই যুবকের কাছ থেকে ৫০ কেজি মাংস উদ্ধার করা হয়। রাতে ফতুল্লার পাগলা বাজারের বিভিন্ন হোটেলে মাংস সরবরাহ করতে গেলে স্থানীয় জনতা কুকুরের মাংস সন্দেহে দুই যুবককে ধরে গণপিটুনি দেন। এ সময় বস্তায় থাকা মাংসগুলো দুই যুবকের মাথায় তুলে দিয়ে ফেসবুকে লাইভ করা হয়। পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হয় ২ যুবককে। পুলিশ
মাংসভর্তি বস্তা নদীতে ফেলে দেয়ার ঘটনা ফেসবুকে ভাইরাল হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
পরে জনতার চাপের মুখে পুলিশ তা তুলে নেয় এবং দুই যুবককে থানায় নিয়ে যায়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে যুবক স্বীকার করছে এগুলো কুকুরের মাংস।
এলাকাবাসী জানায়, ফতুল্লার পাগলা বাজার এলাকার খাবার হোটেলগুলোতে গরুর মাংসের পরিবর্তে দীর্ঘদিন কুকুরের মাংস রান্না করে খাওয়ানো হয়। একই সঙ্গে কুকুরের মাংসের বিরিয়ানি বিক্রি করা হয়। হোটেলের মালিকরা পাগলা বাজার ও ফতুল্লা থেকে এসব মাংস কেনেন। এ নিয়ে পাগলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ স্থানীয় লোকদের সন্দেহ হয়। শনিবার রাতে দুই যুবক বস্তায় করে ৫০ কেজি মাংস নিয়ে আসলে তাদের আটক করা হয়। এতো রাতে মাংস আনা হলো কেন তাদের জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতে না পারায় সন্দেহ হয়। পরে তাদের আটক করে মারধর করে পুলিশে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে মাংসগুলো ফেলে দেয়া হয়।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, পাগলা বাজারে কুকুরের মাংস বিক্রি সন্দেহে দুই যুবককে আটক করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে মাংস সরবরাহকারী দুই যুবককে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় তাদের মালিক ভারত থেকে এসব মাংস আমদানি করেছেন। মাংসগুলো বিভিন্ন হোটেলে সরবরাহ করা হয়। একটি মুসলিম দেশের হোটেলগুলোতে কুকুরের মাংস কেন সরবরাহ করবে- এমনটি জানায় দুই যুবক। মূলত ভারত থেকে মহিষের মাংস আমদানি করে হোটেলগুলোতে সরবরাহ করছিল তারা। মালিকের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি যেহেতু স্পর্শকাতর তাই পশু বিভাগের কর্মকর্তা কামরুজ্জামানকে জানানো হয়েছে। তিনি সোমবার মাংসগুলো যাচাই করবেন। তবে মহিষের মাংসের পরিবর্তে যদি কুকুরের মাংস হয় হবে কেউ পার পাবে না। তিনি জানান, ঘটনায় একটা সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তবে মারধরের শিকার দুই যুবক কোন অভিযোগ করেনি।
এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে থাকা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ জানান, শনিবার রাত ১টার সময় দুই যুবক পাগলা বাজারের বিভিন্ন বিরিয়ানির দোকানে মাংস সরবরাহ করতে আসে। এ সময় স্থানীয়রা ওই মাংসকে কুকুরের মাংস বলে অ্যাখ্যা দেয় এবং সরবরাহকারী দুই যুবক আরিফ(২৮) ও রাব্বি (১৬) নামক দুই মাংস সরবরাহকারীকে  মারধর করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই যুবককে থানায় নিয়ে আসে।

আশরাফ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পারি ওইগুলো আসলে ভারত থেকে আমদানিকৃত মহিষের মাংস। আমরা তাদের কাগজপত্র ও ওই মাংসগুলো চেক করে বিষয়টির সত্যতা পেয়েছি। l