মিরর বাংলাদেশ :
নিজের মাথায় গুলি করে চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ তথ্য জানতে পারে ধানমণ্ডি থানা পুলিশ।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রাজধানীর ধানমন্ডির ৭ নম্বর সড়কের ২৫ নম্বর বাড়ির নিজ বাসায় ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। পিস্তলটি তার লাইসেন্স করা।
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, আবু মহসিন খানের বাসায় ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া গেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, ‘আবু মহসিন কেন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
আত্মহত্যা করার আগে ফেসবুক লাইভে এসে দীর্ঘ সময় কথা বলেন আবু মহসিন। পুলিশ এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে।
আত্মহত্যার আগে যা বলে গেলেন রিয়াজের শ্বশুর:
যাদের জন্য আমি বেশি করছি, প্রত্যেকটা লোকের কাছে আমি প্রতারিত হয়েছি•••
‘‘আমি মহসিন । ঢাকায় থাকি। আমার বয়স ৫৮ বছর। কোনো এক সময়ে আমি ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসারে আক্রান্ত। তাই আমার ব্যবসা কিংবা কোনো কিছুই নেই। ভিডিও লাইভে আসার উদ্দেশ্য হলো, মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং আমার যে এক্সপেরিয়েন্স, সেটা শেয়ার করলে হয় তো সবাই জানতে পারবে, সবাই সাবধানতা অবলম্বন করবে।’’
‘‘গত ৩০ তারিখ আমার খালা মারা যান। তার একটি ছেলে আমেরিকায় থাকে, মা মারা গেল অথচ ছেলেটি আসল না। এটা আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে। কষ্ট লেগেছে।’’
‘‘আজকে আমার আরেকজন খালা মারা গিয়েছেন। তারও একটি ছেলে আমেরিকায় ছিল। অবশ্য তার তিনটা ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। তিনজনই বর্তমানে বাংলাদেশে আছেন। তারা হয়তো দাফন–কাফনের কাজ সম্পন্ন করছে। সেদিক দিয়ে বলব, এই খালা অনেকটা লাকি। ’’
‘‘আমার একটা মাত্র ছেলে। সে অস্ট্রেলিয়াতে থাকে। আমার বাসায় আমি সম্পূর্ণ একা থাকি। আমার খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে খুব ভয় করছে। ’’
‘‘আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়েও থাকি, আমার মনে হয় না যে, এক সপ্তাহ কেউ জানতে পারবে, আমি মারা গেছি। ’’
‘‘ছেলেমেয়ে স্ত্রী যাদের জন্য যাই কিছু আমরা করি। আমরা সব কিছু করি সন্তান এবং ফ্যামিলির জন্য। ’’
‘‘আপনি যদি একশ টাকা ইনকাম করেন, আয় করেন, তার টোয়েন্টি পারসেন্ট টাকাও আপনি নিজের জন্য ব্যয় করেন না।’’
‘‘যদি টোয়েন্টি পারসেন্ট টাকা আপনি নিজের জন্য ব্যয় করেন, তাহলে ৮০ পারসেন্ট টাকা আপনার ফ্যামিলির জন্য ব্যয় হয়।’’
‘‘গত করোনা শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট, যারা একা থাকে, তারাই একমাত্র বলতে পারে বা বোঝেন। ’’
যাদের জন্য আমি বেশি করছি, প্রত্যেকটা লোকের কাছে আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল, নাম কামরুজ্জামান বাবলু। যাকে আমি না খেয়ে তাকে খাইয়েছি। সে আমার ২৩ থেকে ২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে।