যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মজুমদার মিয়া আর নেই

384

মিরর ডেস্ক : যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মজুমদার মিয়া (৬৫) ইন্তিকাল করেছেন ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না এলাইহি রাজিউন। সোমবার রাত ১০টায় লন্ডন সিটিতে  ‘রয়েল লন্ডন হসপিটালে’ তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মজুমদার মিয়ার বর্নীল জীবন। নানা গুনের তিনি গুনাম্বিত ছিলেন। মৃত্যু কালে তিনি ২ছেলে ৪ মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস লন্ডন থেকেই পরিচালিত হয়েছিল কূটনৈতিক তৎপরতা। বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এই সংগ্রাম চলেছিল। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি স্টিয়ারিং কমিটিও গঠন করা হয়েছিল।১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল কোভেন্ট্রিতে লন্ডনের শিক্ষক লুলু বিলকিস বানুর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আজিজুল হক ভূঁইয়া, সিলেটের বিয়ানীবাজারের শামসুর রহমান, মনোয়ার হোসেন, শেখ আব্দুল মান্নান ও সিলেট সদরের ড. কবির চৌধুরীকে সদস্য করে যুক্তরাজ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অ্যাকশন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিই পরবর্তীকালে স্টিয়ারিং কমিটি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন স্থানে যেসব অ্যাকশন কমিটি গঠিত হয়েছিল, তা পরে শাখা কমিটি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।
.
এই কমিটিকে সহযোগিতা করতে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা সিলেটের বিশ্বনাথের গউস খানকে সভাপতি, মৌলভীবাজারের মিনহাজ উদ্দিনকে সহ সভাপতি ও ব্যারিস্টার শাখাওয়াত হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি সহযোগী কমিটি গঠন করা হয়েছিল।স্থানীয়ভাবে ট্রাফালগার স্কয়ার ও হাইড পার্কে জনসমাগমে এসব কমিটি বিরাট ভূমিকা রাখে। আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে পূর্ব বাংলার প্রবাসী বাঙালীদের নিয়ে বিশ্বজনমত গঠনের জন্য লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক জনসভায় হাজার হাজার তৎকালিন পূর্ববাংলার সিলেট অঞ্চলের প্রবাসী বিলেতবাসী উপস্থিত ছিলেন।ইংল্যান্ডে তখন পূর্ববাংলার প্রবাসী সিলেট অঞ্চলের লোকজনই বলতে গেলে ৯০% ছিলেন।সেই সময় বাংলাদেশ ফান্ডে এই সকল প্রবাসীরাই চাঁদা দিয়েছিলেন, যা দেশ স্বাধীনের পর স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
.
এরশাদ সরকারের রোষানলে পড়ে ১৯৮৬ সালে লন্ডন আশার পর ১৯৮৮ সালের কোন এক সময় পরিচয় হয় সেই সভায় উপস্থিত হাজার হাজার সিলেট প্রবাসীদের মধ্যে একজন তরুন বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলি গ্রামের যুক্তরাজ‍্য প্রবাসী মজুমদার মিয়ার সাথে।সপ্তাহিক নতুন দিনে কাজ করার সুবাদে একদিন পূর্ব লন্ডনের আমাদের অফিস 10 Cleveland Way এর Wickham House এ উপস্থিত হয়ে মজুমদার মিয়া সেই সভার গল্প শোনালেন এবং একটি ছবি আমাকে দেখালেন। সহজ সরল মনের মানুষ আওয়ামীলীগের নিবেদিত প্রান মজুমদার মিয়া এই ঐতিহাসিক সভার একটি ছবিতে হাজারো জনতার মধ্যে তার নিজের ছবিটি চিহ্নিত করে আমাদের দেখালেন তখন ছিলো তার যৌবন কাল।খুব গর্ব করে বললেন এই দেখেন আমি যে এই সভায় উপস্থিত ছিলাম আমিও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।
.
এইটা একটা ঐতিহাসিক ছবি আর সেই ছবিতে যে তিনি ছিলেন তাই তাঁর আলাদা একটা গর্ব ছিল।ছবিটি সাথে রাখতে সুযোগ পেলেই এযুগের আওয়ামীলীগের নেতাদের দেখাতেন। রাজাকার এবং রাজাকারদের সন্তানদের তিনি দেখতেই পারতেন না কট্টর একজন আপদামস্তক বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামীলীগের নিবেদিত প্রান। আমার জানামতে যুক্তরাজ্যের এমন কোন আওয়ামীলীগের জনসভা নেই যে সভায় মজুমদার মিয়ার উপস্থিতি ছিল না। যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ যুবলীগ বা ছাত্রলীগের কমিটিতে কে কে হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারী সব খবর জানতেন এদের সাথে কথা বলতেন না এমন কি ঘৃণা করতেন এইতো সেদিন সাহস করে বর্তমান ইউটিউবের যুগে আমার এমপি ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক সুশান্ত দাস গুপ্তের লন্ডন অফিসে এসে ইন্টারভিউও দিয়েছেন।
.
তাঁকে আওয়ামীলীগে মূল্যায়ন করা হয়নি। ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ‍্যে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ,হিসাবে কাজ করেছেন,তিনি সুনামগঞ্জ জেলা সমিতি যুক্তরাজ্য কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ভূয়া আওয়ামীলীগ নেতা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকে দেশ ভরে গেছে।রাজাকারের সন্তান বা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের অনেক সুসময়ে আওয়ামীলীগ থেকে বিভিন্ন ভাবে সুবিধা নিচ্ছে বড় বড় পদেও ড়ুকে পড়েছে এই সকল সুযোগ সন্ধানীরা পদ না পেলেই দলের বিরুদ্ধে চলে যায় এবং যাবে এটা শতভাগ সত্য এদের দুর্দিনের খুজে পাবেন না কিন্তু মজুমদার মিয়ারা আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক,আদর্শচ্যুত হননি কোন দিন, সুযোগ সুবিধা চাননি পাননি।