সংকট নিরসনের সামর্থ্য ও ম্যান্ডেট আমাদের নেই : সিইসি

270

ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি ৪৪টি দলের মধ্যে ১৮টি রাজনৈতিক দল

মিরর বাংলাদেশ  : প্রধান নির্বাচন কমিশনার(সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন , আমরা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে উপলক্ষ করেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সভার আয়োজন করেছি। আমাদের উদ্দেশ্য এ যাবৎ আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি সেগুলো অবহিত করা এবং মতামত গ্রহণ করা। আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছি।’
২৬টি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আলোচনা যথেষ্ট ইতিবাচক ছিল। কেউ কেউ পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। অধিকাংশ আমাদের অবস্থান বুঝেছেন। নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূল নয়, কিছু কিছু দল এখনও অংশ নিতে পারছে না আমরা সেটি স্বীকার করেছি। পরিবেশ অনুকূল-প্রতিকূল হওয়ার বিষয়টি আপেক্ষিক।’
শনিবার সকালে আওয়ামী লীগসহ ২২ দল ইসির আলোচনায় অংশ নিলেও ৯টি দল অনুপস্থিত ছিল। একইভাবে বিএনপিসহ ২২টি দলের অংশগ্রহণের কথা ছিল বিকেলে। তবে সেখানে বিএনপিসহ সমমনা ৯টি দল অংশগ্রহণ করেনি। ফলে দুই ধাপে ৪৪টি দলের মধ্যে ১৮টি রাজনৈতিক দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি।
সিইসি বলেন, আমরা কম সময় নিয়ে দাওয়াত দিয়েছি। যদি দ্রæততার কারণে কোনো দল অংশগ্রহণ না করে, তারা ইচ্ছা পোষণ করলে কমিশন আলাপ করে তাদের কথা শোনার চেষ্টা করবে। কারণ আমরা সবার সঙ্গে মতবিনিময় করতে চাই।নির্বাচন নিয়ে ২৬টি দলের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকের সার্বিক তুলে ধরেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক যে সংকটগুলো আছেÍ আমরা বলেছি, সে বিষয়ে আমাদের প্রত্যাশা সবসময় ইতিবাচক। কিন্তু সেই সংকট নিরসনের সামর্থ্য আমাদের নেই, সেই ম্যান্ডেটও নেই।’
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসার জন্য চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে দুই ধাপে বিএনপিসহ ১৮টি রাজনৈতিক দল ইসির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়নি। এর আগে আওয়ামী লীগসহ ২২টি দলকে শনিবার সকালে এবং বিএনপিসহ ২২টি দলকে বিকেলে আলোচনায় বসার জন্য চিঠি দেয় ইসি।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় প্রথম ধাপের আলোচনা। এতে অংশ নেয় ১৩টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। অংশ নেয়নি ৯টি দল। এর মধ্যে এলডিপি, বিজেপি এবং কল্যাণ পার্টি সংলাপে অংশ নেবে না বলে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে আগেই। বাকিরা অনুপস্থিত ছিল।
যে ৯টি দল আসেনি সেগুলো হলো- এলডিপি, বিজেপি, কমিউনিস্ট পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টি, মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, কল্যাণ পার্টি ও খেলাফত মজলিস।
অংশ নেয় আলোচিত তৃণমূল বিএনপি, এনডিএম ও গণফোরামের একাংশ। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত ফারুক খানের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে আসে। আরও যেসব দল অংশ নেয় তাদের মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি, ইসলামী ঐক্য জোটের একাংশ, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম।
বিকেলে আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপিসহ ২২টি দলের অংশগ্রহণের কথা ছিল। তবে বিএনপি ও সমমনা ৯টি দল ইসির আলোচনায় অংশগ্রহণ করেনি।
নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো না এলেও ১৩টি দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাকের পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
তবে বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (বাংলাদেশ জাসদ) প্রতিনিধিরা অংশ নেননি।তবে যেসব দল নানা কারণে আলোচনায় বসতে পারেনি তারা চাইলে পুনরায় বসতে পারে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন।